কারও দয়ার দানে রাজনীতি করি না : শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আমার মনে হয় পদ পাওয়া অনেক সহজ, তবে আমি মানুষের মনের ভেতর জায়গা করে নিতে চাই। কে কোন দল করে আই ডোন্ট কেয়ার। আমি জাতির পিতার কন্যাকে কিছু কথা বলবো নারায়ণগঞ্জ সম্পর্কে। তার পর মাঠে নামবো। শামীম ওসমানের পায়ের তলায় মাটি আছে। কারও দয়ার দানে রাজনীতি করি না। জনগনের জন্য কথা বলতে এসেছি, জনগনের জন্য কথা বলবো। ২৬ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের নয়া আটি মুক্তিনগর এলাকায় শিফা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের উদ্যোগে ৫২ তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ও আরটিভির ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জটাকে সুন্দর করতে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য চাই, সাংবাদিকদের সাহায্য চাই, রাজনৈতিক অন্য দল গুলোর সাহায্য চাই, সবার সাহায্য চাই। আমি জানুয়ারী মাসের শেষ দিকে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে একসাথে ডাকবো সবাইকে। উদ্দেশ্য কি? মাদক-সন্ত্রাসকে বন্ধ করতে হবে। ভুমিদস্যুতা বন্ধ করতে হবে। আমি এই কাজটা করতে চাই, আপনাদের কাছে হাত জোর করে এই অনুরোধটা করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন জাতি যে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তাকেই সাড়ে ৩ বছর পর আমর মেরে ফেলি।  আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ২১ বার হত্যা করার জন্য চেষ্টা চালানো হয়েছে। আমরা ১৯৭৯-৮০ সাল থেকে জেলখাটা শুরু করেছি। মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন বাংলাদেশের পতাকা উড়ানোর জন্য। আমরা সেটা ভুলে গেছি হয়তো। আমার বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মানুষ যা চায় আমি শামীম ওসমান তা করতে পারছি না। ১৯৯৬ সালে আমি শামীম ওসমান একাই সব পারতাম। আমার পুলিশের কোনো  প্রয়োজন ছিল না।

শামীম ওসমান বলেন, বাবা-মা থাকা মানে মাথার উপর বটগাছের ছায়া থাকে। এখনকার সন্তানদের বলছি জীবিত থাকা অবস্থায় তাদের সেবা করুন। যখন মা বাবা থাকবে না তখন বুঝবেন মা বাবা কতো আপন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জন্য রাজনীতি অনেক কঠিন। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চেয়ে বেশ কিছু প্রজেক্ট আনতে পেরেছি। সেগুলোকে দুরে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এই প্রজেক্ট গুলো হয়ে গেলে, আমাদের আর ঢাকা যাওয়া লাগবে না।

সংসদ সদস্য বলেন, আমার কাউন্সিলররা কাজ করতেছে, আমার মেয়র মহোদয় কাজ করছে, আমার চন্দন শীল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছে আশা করি সব কাজ হয়ে যাবে। কেননা আমি জানি ও (চন্দনশীল) খাওয়ার জন্য হয়নি, দেয়ার জন্য হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসছি আজকে ১৪ বছর। বিএনপির আমলে কি হইছে? এই সিদ্ধিরগঞ্জে আমাদের সাতজনকে হত্যা করা হইসে। আমার বাড়ি হিরা মহলে গিয়ে পেশাব করা হয়েছে। আমার বড় ভাইয়ের ফেক্টরিতে গিয়ে তিনশত গরুর দুধের বান ব্লেড দিয়ে কেটে দিসে। তবে আমরা এতো বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে একটি খারাপ শব্দ পর্যন্ত বলি নাই। আমি জানি যে শর্ষের ভেতরে ভূত আছে, রাজনীতি করি তো এগুলো জানি।

সম্মাননা অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী চন্দন শীল। শিফা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান আরটিভির জেলা প্রতিনিধি সাহাদাত হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন, ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মো. মশিউর রহমান, জাতীয় ওলামা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি ওমর ফারুক, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবিন, কালের কন্ঠ ও নিউজ-২৪ এর জেলা প্রতিনিধি দিলীপ কুমার মণ্ডলসহ অনেকে।

add-content

আরও খবর

পঠিত