উৎসবমুখর প‌রি‌বে‌শে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে চলছে ভোট গ্রহণ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : শান্তিপূর্ণ ভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। আজ ১৬ই জানুয়ারি রবিবার সকাল ৮টা থেকে নাসিকের ২৭ ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয়, একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এবার নাসিক নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ভোটাররা। এদিকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলোতে পুরুষ ভোটারদের পাশাপাশি নারী ভোটারের সংখ্যাও বেশি চোখে পড়ছে। সকাল থেকেই নারী-পুরুষ ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। তবে ভোট গ্রহণে কিছুটা ধীরগতির অভিযোগ করছেন ভোটাররা। একই কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। এখন পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ ভোট গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩ ভোট কক্ষে লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ভোটের মাঠে মেয়র পদে ৭জন, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৩৪ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৪৫ জনসহ মোট ১৮৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন।

মেয়র পদে জন প্রার্থী হলেন : নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী, হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার, হাতপাখা প্রতীকে সলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাসুম বিল্লাহ, হাত ঘড়ি প্রতীকে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস, দেয়াল ঘড়ি প্রতীকে খেলাফত মজলিসের বি এম সিরাজুল মামুন, বট গাছ প্রতীকে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের জসীম উদ্দীন এবং ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. কামরুল ইসলাম (বাবু)

নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে এবং যেসব প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে সেগুলো ভোটের দিন বন্ধ রাখতে গত মঙ্গলবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এবারের নাসিক নির্বাচনে ১৯২টি ভোটকেন্দ্র এবং কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৬ সদস্য। এছাড়া ভোটের দিন নগরীতে বহিরাগতের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার জানান, নারায়ণগঞ্জে আদালাভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই, সব কেন্দ্রকেই বিশেষ বিবেচনায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ১৯২টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে একজন এসআইয়ের নেতৃতে রয়েছেন পাঁচ পুলিশ সদস্য। ছাড়া আট পুরুষ চার নারী আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, নাসিক নির্বাচনে পুলিশের ২৭টি ইউনিট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। ছাড়া পুলিশের মোবাইল টিম রয়েছে ৬৪টি, প্রতি টিমে সদস্য রয়েছে পাঁচজন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১৪ প্লাটুন সদস্য রয়েছে।

নাসিক নির্বাচনে র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্ন রয়েছে তিনটি, চেকপোস্ট রয়েছে ছয়টি, টহল টিম রয়েছে সাতটি স্ট্যাটিক টিম রয়েছে দুটি।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর। সে সময় প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পেয়েছিলেন ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১৬ দিন। এবার ভোটগ্রহণ হবে ১৬ই জানুয়ারি। প্রচার শুরু হয়েছে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর, আর শেষ হবে বছরের ১৪ই জানুয়ারি রাত ১২টায়। অর্থাৎ এবার প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পেয়েছেন ১৮ দিন।

এরআগে গত ৩০ই নভেম্বর এই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এবার হচ্ছে তৃতীয় নির্বাচন। প্রথমবার ৯টি ওয়ার্ডে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে ভোট হয়। এবার ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে। প্রথমবার নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় সিটিতে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন চালুর পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত