নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে দুইজনকে ৬ দিনের এবং একজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র্যাব। এক বিশেষ অভিযানে গত রোববার রাতে দুইজনকে এবং সোমবার দুপুরে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার তিনজন ত্বকী হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল, তবে তারা এর আগে গ্রেপ্তার হননি। তদন্তের স্বার্থে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- শাফায়েত হোসেন শিপন, মামুন মিয়া ও কাজল হাওলাদার।
মঙ্গলবার রাত সোয়া নয়টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া থেকে শিপনকে এবং কালিবাজার এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে কাজলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশীদ জানান, মামুন ও শিপনকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালতে তোলা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে ছয়দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার একই মামলায় গ্রেপ্তার কাজল নামে আরেক আসামিকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলী পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ত্বকী হত্যা মামলায় ইউসুফ হোসেন লিটন, সুলতান শওকত ভ্রমর, রিফাত, তায়েব উদ্দীন জ্যাকি ও সালেহ রহমান সীমান্ত নামে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। তাদের মধ্যে লিটন ও ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিল। তবে, পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়ে এই পাঁচজনই পলাতক রয়েছেন।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় সুধীজন পাঠাগারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। পরদিন তার ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়, যেখানে দেখা যায় মেধাবী এ কিশোর সারাবিশ্বে পদার্থবিজ্ঞানে সর্বোচ্চ ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছিলেন। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে দীর্ঘ সাড়ে ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও এই হত্যা মামলাটির তদন্ত শেষ করতে পারেনি র্যাব। আদালতে অভিযোগপত্র জমা না দেওয়ায় বিচার শুরু হয়নি।