নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়িকা পরীমণির কথিত মা নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ ৬ই আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে রাজধানীর পান্থপথ এলাকা থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
আটকের পর চয়নিকা চৌধুরীকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তার আটকের বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
গত বুধবার বিকালে রাজধানীর বারিধারা বাসা থেকে গ্রেফতার হন পরীমণি। এর পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন চয়নিকা চৌধুরী। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, পরীমণির সঙ্গে শুধুই কাজের সম্পর্ক তার। আর কোনো সম্পর্ক নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো প্রয়োজনে ডাকলে তিনি যাবেন।
গত জুন মাসে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগের ঘটনার সময় পাশে ছিলেন চয়নিকা। তাকে পরীমণি মম (মা) বলে সম্বোধন করেন। চয়নিকাও বলেন, পরীমণি ছোটবেলায় মা হারিয়েছে। ও আমাকে মম বলে ডাকে। আমিও ওকে মেয়ের মতো স্নেহ করি।
বুধবার বিপুল পরিমাণ মদ ও ভয়ংকর মাদক এলএসডি ও আইসসহ গ্রেফতার হন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমণি। এরপর রাতে গ্রেফতার হন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরীমণির বন্ধু নজরুল ইসলাম রাজ। তখন থেকে চয়নিকাকেও নজরদারিতে রাখা হয়। এছাড়া পরীমণির কস্টিউম ডিজাইনার জিমিকেও আটক করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে ঢাকা টাইমসকে বলেন, পরীমণি ও নজরুল ইসলাম আমাদেরকে তাদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাতে পরীমনির নানা অপরাধের সঙ্গে এই দুই জন ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
গত জুনের শুরুতে বোট ক্লাব কাণ্ডে আলোচনায় আসেন পরীমণি। সেদিনের অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন ঢাকাই ছবির এই নায়িকা। সেদিন পুরোটা সময় তার পাশে ছিলেন নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের যুগ্ম–কমিশনার হারুন–অর–রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনির অন্যতম সহযোগী ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিসহ অন্য যারা অবৈধ কাজ ব্যবসায় জড়িত তাদের শিগগির গ্রেফতার করা হবে।
হারুন বলেন, পরীমণি যেসব অবৈধ কাজ ও ব্যবসা করতো, সেগুলো কাদেরকে নিয়ে করতো, কাদের সহযোগিতায় করতো, কারা তার নেপথ্যে রয়েছে, আমরা তাদের নাম পেয়েছি। তার বক্তব্য নোট করছি। যারাই তার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরই গ্রেফতার করা হবে।
পরীমণির বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে, জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, পরীমণিএকজন চিত্র নায়িকা। তিনি এর আড়ালে যে খারাপ ব্যবসাগুলো করতেন এবং এ ব্যবসাগুলোতে কারা তাকে পেট্রোনাইজ করেছেন, এ কথাগুলো তিনিও স্বীকার করেছেন। আমরাও নজরদারি করছি। ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমণির সঙ্গে জিমি নামের এক তরুণ গিয়েছিলেন। তার বিষয়ে আমরা খোঁজ–খবর নিচ্ছি। আশা করি, দ্রুত সবাইকে আমরা আইনের আওতায় আনতে পারব।
উল্লেখ্য, চয়নিকা চৌধুরী বাংলাদেশের একজন আলোচিত পরিচালক। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শেষ বেলায় নাটকের মধ্য দিয়ে পরিচালনা শুরু করেন তিনি। বিশ্বসুন্দরী চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। ওই সিনেমার নায়িকা পরীমণি। এই সিনেমার কাজের পর থেকে নায়িকা পরীমণির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।