নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর সংবাদ দাতা ) : কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ এই প্রবাদের অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে যে একই পরিস্থিতিতে কারো মনে আসে আনন্দ, সুখ ও উল্লাস আবার অন্য দিকে কারো বা আসে বিষাদ, দু:খ ও হতাশা। এমন এক ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২২নং ওয়ার্ডস্থ লেজারার্স এলাকায়। ওই এলাকায় ২৪টি পরিবারের কাছ থেকে রেশন কার্ডের কথা বলে আইডি কার্ড, পাসপোর্ট সাইজ ২ কপি ছবিসহ প্রায় ১৪ হাজার টাকা নিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক। তার নাম মো: শামীম। সে নাসিক ২২নং ওয়ার্ডস্থ বাবুপাড়া বন্দর পুলিশ ফাঁড়ী সংলগ্ন মৃত মোতালিব মিয়ার ছেলে ও উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান তথা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুলের শ্যালক।
২৭ জুলাই সোমবার লেজারার্স এলাকায় সরেজমিনে গেলে প্রতারিত হওয়া ভূক্তভোগীদের কাছ থেকে রেশন কার্ডের কথা বলে টাকা নিয়ে তালবাহানা করছে বলে এমন নানা অভিযোগ তুলে ধরেন তারা। এ সময় তারা হাত উচিয়ে আত্নসাতকারী শামীমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গনমাধ্যমের সহায়তা কামনা করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতারণার শিকার বাক-প্রতিবন্ধী শান্তনা রানী সরকার জানান, গত ঈদ-উল ফিতরের ৩দিন পর মুকুল চেয়ারম্যানের শ্যালক শামীম হামিদা বেগমের মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে রেশন কার্ড করে দিবে বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ছবি, আইডি কার্ডসহ নগদ ৫শ টাকা করে নিয়েছে। বলেছে ২২দিন পর রেশন কার্ড করে দিবে। আমরা ২ বছর চাল, আটা পাব। কিন্তু ২মাস পেরিয়ে গেলেও আমাদের রেশন কার্ড তো দূরের কথা টাকা ফেরত নিয়েও তালবাহানা করছে।
প্রতারণার শিকার হামিদা বেগম বলেন, মানুষের বাড়িতে জী এর কাজ করে খায়। বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা এমন অনেক মানুষের কাছে সাবেক বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলের শ্যালক মৃত মোতালিব মিয়ার ছেলে মো. শামীম সরকারী রেশন কার্ড করে দিবে বলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কারো কাছে ৫শ কারো কাছে ১ হাজার টাকাও নিয়েছে। ২২দিন পর তাদের কার্ড করার কথা বললেও ২মাস পেরিয়ে যাচ্ছে কার্ড তো করে দিচ্ছে না বরং টাকা ফেরতও না দিয়ে তালবাহানা করছে। আমার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরতের কথা বললে সে তাল বাহানা করছে। আমি কাউন্সিলর সুলতান আহমেদের কাছে নালিশ করতে গেলে সে আইনী ব্যবস্থা নিতে বলে। আমরা এই প্রতারকের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে শামীমের সাথে মোবাইল ফোনে আলাপকালে তিনি জানান, আমার সাথে কোন লেনদেন হয়নি। ওই এলাকার হামিদা বেগম অনেক মহিলার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। আমি কার্ড করে দিতে সুপারিশ করেছি মাত্র। আর এখন আমার উপরই টাকা নেওয়ার দোষ চাপানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহমেদ ভূইয়া জানান, আমার অফিস সংশ্লিষ্ট কেউ এমন কাজ করে থাকলে আমি ব্যবস্থা নিব। বাইরের কেউ রেশন কার্ডের কথা বলে যদি টাকা নিয়ে থাকে তবে এ দায়ভার তো আর আমি নিতে পারি না। বেআইনী কাজ যেই করে থাকুন তাকে আইনী পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।