নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( চাঁদপুর প্রতিনিধি ) : স্কুলের ভবন নির্মাণ করার জন্য প্রায় ৫০ টি কবর অনৈতিকভাবে ও বিনা অনুমতিতে উচ্ছেদ করা হয়েছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বিনন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্কুলের পর্যাপ্ত জায়গা থাকা সত্ত্বেও কবরস্থান দখল হওয়ার কারণে এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছে এলাকাবাসী।
সোমবার সকালে বিনন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, ভবন নির্মাণ করার জন্য পুরাতন টিনশেড ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ওই স্থানে নতুন ভবন নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। নতুন ভবন করার লক্ষ্যে পাইলিংয়ের জন্য উত্তর ও পূর্ব পাশে অবস্থিত কবরস্থান ঘেঁষে প্রায় ৫০ টি কবর ভেকু মেশিন দিয়ে উচ্ছেদ করে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনা কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষের জড়ানোর মত অবস্থা তৈরি হয়। কাজ স্থাগিত রাখার দাবীতে এলাকার শত শত নারী পুরুষ জড়ো হয়। পরে কাজ স্থগিত করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয় এলাকার মিজানুর রহমান মানিক, চায়না বেগম, মাহমুদা, স্বপ্না, রফিকুল ইসলাম ঢালী, জামশেদ, দবির হোসেন, দুলাল, সুমন, রোজিনা, দিপু সরকার গং বলেন, স্কুলের জন্য নির্দিষ্ট ৩৩ শতাংশ জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় ভবন না করে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে রাতের আঁধারে কবরগুলো ধ্বংস করেছে। স্কুলের উন্নয়ন হোক তা আমরাও চাই। কিন্তু স্কুলের পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে কেন কবরস্থানে ভবন করতে হবে? আমাদের দাদা-দাদী, নানা-নানি ও পিতা-মাতার কবর ধ্বংস করে ফেলেছে তারা। তারা আরও জানান, স্কুলের কিছু জায়গা খালে পড়ে আছে। সেখানেই মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারের লাভের জন্য ওই খাল ভরাট না করে কবরস্থান দখল করেছে। আমরা কবরস্থানে ভবন হতে দিবো না। জায়গা পরিমাপ করে স্কুলের জায়গায়ই ভবন নির্মাণ করার দাবী জানান এলাকাবাসী।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি তোফায়েল, সাইফুল, জসিম ও মজনু বলেন, আমাদের জানামতে ভবন যেখানে হওয়ার কথা সেখানেই কাজ চলছে। তবে উপর থেকে নির্দেশ এসেছে তাই কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসলে কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, ওই স্কুলে একটি ভবন হবে সেটা আমাদের কাছে তথ্য আছে। ভবনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে সেখানেই ভবন হবে, কবরস্থানে তো হওয়ার কথা নয়। এ বিষয়টি প্রকৌশল বিভাগকে অবহিত করার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, আমি খবর পাওয়ার সাথে সাথে এলাকার লোকজনকে আসতে বলেছি। তারা আসলে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।