নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : বন্দরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে রেস্টুরেন্ট, পার্কে ও ফাঁকা জায়গায় অশালীন ও বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজের ক্লাশ চলাকালীন সময়ে এসব শিক্ষার্থীদের বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা দিন দিন বেড়েই চলেছে। পার্কে ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে জোড়ায় জোড়ায় স্কুল শিক্ষার্থীরা দৃষ্টিকটু ভাবে বসে সময় কাটাচ্ছে।
এ বিষয়ে সচেতন মহল মনে করেন, স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রতি খোঁজ-খবর নেয়া জরুরি। তাদের সন্তানরা ঠিকমতো স্কুল-কলেজে যাচ্ছে কিনা বা সবগুলো ক্লাশে অংশ নিচ্ছে কিনা, তা প্রতিদিন খোঁজ নেয়া খুবই জরুরি। এখনই এসব পথ থেকে ফিরিয়ে না আনা গেলে তাদের আর পড়াশুনায় মনোযোগী করা যাবে না। সচেতন মহলের দাবি হচ্ছে প্রশাসনের তদারকিতে যে করেই হোক বিদ্যালয়ের ক্লাশ চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী ছেলে মেয়েরা যেন পার্কে গিয়ে বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা করে লেখাপড়া ধ্বংস করে বাজে পথে না যেতে পারে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া।
বন্দরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়ায়। শুধু তাই নয়, প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী স্কুল ও কলেজ পোশাক পড়ে এক সাথে বসে মাদক সেবন করছে। তারা প্রত্যেকেই মাদক সেবন ও ধুমপানে আসক্ত হয়ে পড়েছে। আর এই চিত্র খুব সহজে দেখা মিলে বন্দরের সিএসডির মাঠ, রুপালীর মাঠ, মেরিন এর জেটির পাশে, টিউশেন গার্ডেন, আমিন আবাসিক এলাকার বালুর মাঠে আলী মামার চটপটির দোকানসহ বিভিন্ন বিনোদনের স্থানে। দেখার যেন কেউই নেই। মা-বাবা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকে। ভাবেন সন্তান মানুষ হচ্ছে। কিন্তু মা-বাবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে তারা সময় কাটায় বিভিন্ন পার্কে। যেন সেই স্কুল-কলেজ ফাঁকির উৎকৃষ্ট স্থানে পরিণত হয়েছে। ঘড়ির কাটায় সময়টা তখন সকাল ১১টা ১৫ মিনিট। স্কুল বা কলেজের ক্লাস চলাকালীন এই সময়টায় বন্দর আমিন আবাসিক এলাকার বালুর মাঠে আলী মামার চটপটির দোকানে গিয়ে দেখা গেল কোথাও জোড়ায় জোড়ায় আবার কোথাও দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা। গায়ে স্কুলের ইউনির্ফম আর সাথে বইয়ের ব্যাগ।
কয়েক জন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, তারা বন্দর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, বি এম ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজ, কদম রসুল কলেজসহ বিভিন্ন সনামধন্য স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।
চটপটির দোকানে অড্ডারত এক শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে সে বলে, এটা ভাল না, তবে ক্লাশের পড়া কমপ্লিট করতে পারিনি বিধায় ফুসকা খেতে এসেছি। অন্য এক শিক্ষার্থী বলে, মা-বাবা জানলে কষ্ট পাবে, তবে নদীর পারে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে ভাল লাগে। শিক্ষার্থীরা নিত্য দিন স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছে না। ঝুঁকে পড়ছে নানান অসামাজিক ও অশ্লালীন কর্মকান্ডে।
এই বিষয়ে অভিভাবকরা বলেন, মা-বাবাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। শিক্ষক-অভিভাবকদের সমন্বয়ে ছেলে-মেয়েদেরকে সচেতন করতে হবে। এ বিষয়ে কথা হয় একাধিক শিক্ষকের সাথে জানান, স্কুল চলাকালে কোন ছাত্র বা ছাত্রী পার্কে কিংবা কোথাও ঘোরাফেরা করা উচিত না। তাছাড়া এ বিষয়ে শিক্ষকদের পাশাপাশি অবশ্যই অবিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি এ কে এম শাহিন মন্ডল বলেন, বর্তমান স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রেষনা দেওয়া হচ্ছে ক্লাস ফাঁকি না দেওয়ার জন্য। আমি আমার অফিসারদের বলে দিবো কোন শিক্ষার্থী ক্লাস চলাকালীন সময় আড্ডা দিতে দেখলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।