নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর সৈনিক শাহীন আলম (২২) নামে এক তরুন যুবক হত্যার ঘটনায় ৩ পেশাদার ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৮ই জানুয়ারি মঙ্গলবার রাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ১৯ই জানুয়ারি বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক–সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো : জীবন (২৩), সুমন মিয়া ওরফে বিয়ার সুমন (২৫) এবং জুম্মন মিয়া (২২)। এ সময় সেনাবাহিনীর সৈনিক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত জীবন সিদ্ধিরগঞ্জের সিআই খোলা এলাকার মো. আলী হোসেনের ছেলে, মো. সুমন মিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার শওকত আলীর ছেলে এবং একই এলাকার মো. জুম্মন মিয়া আসলাম মিয়ার ছেলে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্লুলেস এ মামলার তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান
সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী অফিসার উপ-পরিদর্শক ফয়সাল আলম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক মহসিন।
এরআগে গত ১৪ই জানুয়ারি শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাদানীনগর এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্ট লেবুখালী, পটুয়াখালীতে কর্মরত সৈনিক (কুক) শাহীন আলম (২২) ৭ দিনের ছুটি ভোগ করার জন্য নিজ বাড়ি চাঁদপুর এর উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে তাঁর বন্ধু ফারহাবিব এর বাসায় (সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন হিরাঝিল এলাকা) রাত্রিযাপন করতে যাচ্ছিল। এ সময় মৌচাক ১০ তলার মোড়ের সামনে পৌঁছালে পেছন দিক থেকে পেশাদার ছিনতাইকারী জীবন, সুমন ওরফে বিয়ার সুমন ও জুম্মন অটোরিকশা যোগে এসে শাহীনকে গতিরোধ করে। এ সময় ছিনতাইকারীরা সৈনিক শাহীন আলম এর নিকট থাকা মানিব্যাগ, টাকা পয়সা ছিনতাইকালে সে বাধা প্রদান করায় ছিনতাইকারী জীবন ও সুমন তাদের হাতে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়ে প্রাণ নাশের উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে বলে জানা যায়।
এদিকে খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ সৈনিক শহীন আলমকে উদ্ধার করে দ্রুত সাইনবোর্ড এলাকার প্রো–এ্যাকটিভ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স যোগে আহত সৈনিক শাহীন আলমকে ঢাকা সিএমএইচ এ প্রেরণ করা হয়। পরে ভোর সাড়ে ৫ টায় সিএমএইচ এর কর্তব্যরত ডাক্তার সৈনিক শাহীন আলমকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ঐ দিন রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা (২৯) দায়ের করেন।
পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামেন তদন্তে এরপর ১৮ই জানুয়ারি রাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পেশাদার ছিনতাইকারী জীবন, সুমন ওরফে বিয়ার সুমন ও জুম্মনকে গ্রেফতার করে। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ারটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ছিনতাই, দস্যুতা, মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।