ষড়যন্ত্র থাকবে, তবু দেশ এগিয়ে যাবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার )  : প্রধানমন্ত্রী সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, সব বাধাবিপত্তি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাবে। অগ্রগতির ধারা যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেক রকম চক্রান্তষড়যন্ত্র থাকবে। সেগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। যতই সমালোচনা হোক, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে। ২৮ই নভেম্বর রবিবার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বক্তব্যের প্রায় পুরো অংশ জুড়েই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণের সার্বিক প্রেক্ষাপট এবং এক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গ্রাজুয়েশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এটি সম্ভব হয়েছে। জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে অর্জন আমাদের জন্য অনেক গৌরবের। এটি বাঙালি জাতির বিরল সম্মান অনন্য অর্জন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই আমরা সফলতা অর্জন করতে পেরেছি। অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমালোচনায় কান না দিয়ে আমরা অভীষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি। সঠিক দিকনির্দেশনা নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করছি।

বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার কারণে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। একাজ আমরা সহজভাবে করতে পেরেছি, তা কিন্তু নয়। যাত্রাপথ কখনো সুগম ছিল না। আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, গাড়িতে আগুন, অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধএসব কর্মকাণ্ড বিএনপি এখনো প্রত্যাহার করেনি।

তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টির জন্য নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। এরপর এই কোভিড১৯ মহামারিও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। বিশ্বের অর্থনীতির চাকা যখন স্থবির তখন আমরা তা সচল রেখেছি। ফলে দেশের অর্থনীতি গতিশীল রেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নতসমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। এজন্য আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হতো। জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলজেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ বা বেগম জিয়ার কথা বলেন, তারা তো কেউ দেশকে উন্নত করতে চাননি। ক্ষমতা তাদের কাছে ছিল ভোগের বস্তু বিলাসবহুল জীবন। তারা ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দলে টেনে একটি শ্রেণি তৈরি করলো। সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নশীল দেশ উন্নীত হওয়ার কারণে আমরা সুবিধা যেমন পাবো, অন্যদিকে স্বল্পোন্নত দেশের সুযোগগুলো পাবো না। অবশ্য আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছি, করোনাকালের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে। এতে সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদার প্রাপ্তি দেশের জনগণের বলেও এসময় উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গবন্ধু কন্যা আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, যাদের জন্য জাতির পিতা সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করলেন, সেই বাঙালি জাতির হাতেই তার জীবন দিতে হলো।

এসময় দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সবকিছু জেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি দেশে ফিরে আসি। সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। বার বার আঘাত এসেছে, কিন্তু কেন জানি না আল্লাহ্ রাব্বুল আল আমিন বার বার বাঁচিয়েছেন। সেবা করার সুযোগ পেয়েছি বলেই একটা মর্যাদায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি।

add-content

আরও খবর

পঠিত