নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : দৃষ্টিনন্দন ৫০টি মসজিদ-সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারা দেশের জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করেছে সরকার। এর মধ্যে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আজ ১০ই জুন বৃহস্পতিবার একযোগে ৫০টি মডেল মসজিদ-সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল সোয়া ১১টার দিকে গণভবন থেকে একযোগে আধুনিক ও সুসজ্জিত এসব মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে আট হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯ লাখ ৯০ হাজার ৩৬ বর্গমিটার আয়তনের নির্মিতব্য এসব মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় অন্তত ১২ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ কোটি টাকা। এসব মসজিদে প্রতিদিন চার লাখ ৪০ হাজার ৪৪০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারীর নামাজ পড়ার সুবিধা থাকবে। পবিত্র কোরআন হাদিসের জ্ঞান অর্জনের জন্য এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৩৪ হাজার মানুষ লাইব্রেরিতে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন ৬ হাজার ৮০০ জন গবেষকের গবেষণার সুযোগ, ৫৬ হাজার মুসল্লির দ্বীনি দাওয়াতের কার্যক্রম পরিচালনা, প্রতিবছর ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কোরআন হেফজ করার সুবিধা, প্রতিবছর ১৬ হাজার ৮০০ শিশুর প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন এবং ২ হাজার ২৪০ জন অতিথির আবাসনের সুযোগ থাকবে। এ ছাড়া মসজিদের খতিব ও ইমামদের মাধ্যমে প্রতিবছর সন্ত্রাস ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জনসচেতনামুলক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
যে ৫০টি উপজেলায় মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে সেগুলো হলো ঢাকার সাভার, ফরিদপুরে মধুখালী, সালথায়, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া ও কুলিয়ারচর, মানিকগঞ্জের শিবালয়, রাজবাড়ী সদর, শরীয়তপুর সদর ও গোসাইরহাট, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শেরপুর ও কাহালু, নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা, সিরাজগঞ্জ জেলা সদর ও উপজেলা সদর, পাবনার চাটমোহর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা, দিনাজপুরের খানসামা ও বিরল, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও উপজেলা সদর, রংপুর জেলা সদর, মিঠাপুকুর, উপজেলা সদর, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, নোয়াখালীর সুবর্ণচর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও তারাকান্দা, চট্টগ্রাম জেলা সদর, লোহাগড়া, মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, জামালপুরের ইসলামপুর ও উপজেলা সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বিজয়নগরে, ভোলা সদর, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, কুমিল্লার দাউদকান্দি, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, কুষ্টিয়া সদর, খুলনার জেলা সদর, চাঁদপুরের কচুয়া, ঝালকাঠির রাজাপুর এবং চুয়াডাঙ্গা সদর।
এর আগে ৯ই জুন বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জানিয়েছিলেন, মডেল মসজিদ এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো ইসলামের প্রচার-প্রসারে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। ধর্মীয় সভা, সমাবেশ, সেমিনার, হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ, হামদ ও নাত, কেরাত প্রতিযোগিতা তথা ইসলামিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, ইসলামিক রিসার্চ, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ট্রেনিং, সামাজিক সমস্যা বাল্যবিয়ে যৌতুক, মাদকসহ নানা ধরনের সামাজিক সমস্যা সমাধানে এ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৩ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মাণ করা হবে। জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে চারতলা, উপজেলা পর্যায়ে তিন তলা, উপকূলীয় এলাকায় চারতলা (যার মধ্যে নিচতলা ফাঁকা) মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।