নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাবের হাতে বহুমুখী প্রতারণার মূলহোতা প্রদীপ চন্দ্র বর্মণ (৩৫) সহ তার সহযোগী মো. আনিসুর রহমান (৪৫) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্ত সাপক্ষে র্যাব-১১ তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩১ই মে সোমবার বেলা ৩ টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মাদানীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব-১১ এর সদস্যরা। অভিযানকালে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ১টি প্রাইভেটকার, ২টি মোবাইল, ব্যানার, জীবনবৃত্তান্ত ফরম, সাংবাদিক আইডি কার্ড, তালাশ নিউজ-৭৯ টিভি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
৩১ই মে সোমবার মধ্যরাত দেড়টায় নারায়ণগঞ্জ বার্তাকে র্যাব-১১ এর সিনিয়র এএসপি প্রণব কুমার এক সংবাদ প্রেরিত বার্তায় জানান, বহুমুখী প্রতারক চক্রের মূলহোতা প্রদীপ চন্দ্র বর্মণ ওয়াকিটকি সেট, মনোগ্রাম সম্বলিত জ্যাকেট ও হ্যান্ডকাফ দেখিয়ে নিজেকে একাধারে সমাজের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তালাশ নিউজ টিভি-৭৯ ও দৈনিক সত্যের সংগ্রাম পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে পরিচয় প্রদান করে থাকে এবং সে ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করে, ট্রাফিক পুলিশ ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চাকুরীর আশ্বাস দিয়ে এবং তার কথিত টিভি চ্যানেল ও সমাজের জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অন্যান্য সদস্য পদে ও নিউজ চ্যানেলের জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রæতি প্রদান করে সরল বিশ্বাসী মানুষের কাছ থেকে চাকুরী প্রদানের আশ্বাস দিয়ে পরিকল্পনা মাফিক বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। পরবর্তীতে তার কাছে কেউ টাকা ফেরত চাইলে তার কথিত টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে সে তাদের অত্যাচারের হুমকি প্রদান করতো বলে ভুক্তভুগিদের কাছ থেকে এই বিষয় জানা যায়।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো এই প্রদীপ চন্দ্র নিজে এক সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিল। ২০১৫ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়াও অবৈধভাবে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার ও বিতরণ করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতারক প্রদীপ এর প্রধান সহযোগী আনিসুর রহমান নিজে মূলত একজন রিকশা চালক বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে নতুন সদস্য সংগ্রেহের কাজে তাকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করে আসছিল বলে জানা যায়। অভিযোগ প্রাপ্তির পর সরেজমিনে বিষয়টি সত্যতা যাচায়ের পর র্যাব-১১ তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই বহুমুখী প্রতারক চক্রের মূলহোতা ও তার সহযোগী আনিসুর রহমানকে হাতে-নাতে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-১১ এমন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে এবং এই ধরণের অভিযান অব্যহত থাকবে বলে জানান তিনি। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।