নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : আগামী ৩০ই মে রবিবার ফাইজার–বায়োএনটেকের তৈরি এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা দেশে এসে পৌঁছবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক আজ ২৭ই মে বৃহস্পতিবার রাতে এ তথ্য এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামী রবিবার কোভ্যাক্স–এর পক্ষ থেকে ফাইজারের এক লাখ ৬২০ ডোজ দেশে পৌঁছাবে। তবে কাদের এ টিকা দেওয়া হবে, কবে নাগাদ টিকা প্রয়োগ শুরু হবে জানতে চাইলি তিনি বলেন, এসব এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
ডা. শামসুল হক বলেন, আমরা এরইমধ্যে এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবো। রবিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে টিকাগুলো দেশে পৌঁছাবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদফতরের আবেদনক্রমে যাচাই–বাছাই সাপেক্ষে আজ ২৭ই মে বৃহস্পতিবার ফাইজারের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।
এতে জানানো হয়, ২৪ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ফাইজার–বায়োএনটেকের টিকা ইমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশনের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর আবেদন করা হয়। ২৫ মে অধিদপ্তর ভ্যাকসিনের ডোসিয়ার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পার্ট, সিএমসি পার্ট এবং রেগুলেটরি স্ট্যাটাস) মূল্যায়ন করে এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটির মতামতের জন্য উপস্থাপন করে। ওই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার ফাইজার–বায়োএনটেকের এ টিকার জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়।
আরও জানানো হয়, ভ্যাকসিনটির লোকাল লিগ্যাল অর্গানাইজেশন হিসেবে থাকছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ফাইজারের টিকা ১২ বছরের বেশি বয়সের মানুষের জন্য ব্যবহারযোগ্য। তবে বাংলাদেশে সরকারের ডেপ্লয়মেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী নির্ধারিত বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে এ টিকা দেওয়া হবে। ফাইজারের টিকার দুই ডোজের মধ্যে প্রথম ডোজের তিন থেকে চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।
গত ১৯ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বরাত দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘জুনের ২ তারিখে গ্যাভির কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে ফাইজারের অন্তত এক লাখ ছয় হাজার কোভিড ভ্যাক্সিন বাংলাদেশে পাঠাবে বলে আজ নিশ্চিত করা হয়েছে। টেলিফোনে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।’
তবে আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২ জুনের আগেই আগামী রবিবার (৩০ মে) এ টিকা আসছে।
দরিদ্র দেশগুলোর টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিতে গঠিত আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনের (গ্যাভি) কাছ থেকে ফাইজারের এ টিকা আসছে।
প্রাণঘাতী ও সংক্রামক ব্যাধি থেকে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের জীবনরক্ষায় টিকা প্রদানে ভূমিকা রাখা গ্যাভি বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯২টি দেশকে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোর টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স।
কোভ্যাক্স–এর পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো কোভিড–১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ছাড়াও উদ্যোগটির সঙ্গে রয়েছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন ও দাতব্য সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে, ভ্যাকসিন মজুত করে না রেখে ধনী–গরিব নির্বিশেষে সর্বোচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোতে তা বণ্টন করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে উৎসাহিত করা।
বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ১৩ কোটির বেশি মানুষকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। কোভ্যাক্স থেকে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ।
চলতি বছরের জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারির মধ্যেই কোভ্যাক্স থেকে টিকা পাওয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিশ্বজুড়ে টিকার সংকট তৈরি হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়।