নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : অবশেষে দীর্ঘ এক বছর ১২ দিন পর আগামী ৩০ মার্চ থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্কুল-কলেজ খুললে পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিতে সাপ্তাহিক দুই দিন ছুটি ছাড়া পাঁচ দিন ক্লাস করতে হবে। বাকিদের সপ্তাহে একদিন ক্লাসে আসতে হবে। ২৭ই ফেব্রুয়ারি শনিবার আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক চলে টানা দুই ঘণ্টা।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৩০ মার্চ খুলে দেব। আগেও যেভাবে বলেছি প্রথমেই প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণিকে প্রতিদিন হয়তো স্কুলে আনা হবে। আমরা দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিকে প্রতিদিন আনবো। বাকি ক্লাসগুলোর শিক্ষার্থীরা হয়তো প্রথমে সপ্তাহে একদিন আসবে। কয়েক দিন পর থেকে তারা সপ্তাহে দুই দিন আসবে। পর্যায়ক্রমে আমরা স্বাভাবিকের দিকে নিয়ে যাব ইনশা আল্লাহ।
দীপু মনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে অন্যান্য যে প্রস্তুতি সেগুলো আমাদের নেয়া হয়েছে। আশা করছি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আগে শিক্ষক ও কর্মচারীদের করোনা টিকা দেয়ার বিষয়টিও সমাপ্ত করতে পারব।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোথাও কোথাও যদি মেরামত ও সংস্কারের দরকার হয়। আপনারা জানেন- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে আমরা বলেছি ১৭ মে হলগুলো খুলে দেয়া হবে, এর আগেই সংস্কার-মেরামত কাজ করা হবে। আর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে যে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর, পিডব্লিউডি- এদের সকলের মাধ্যমে মেরামতের কাজগুলো সম্পন্ন করব।
তিনি আরো বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে সব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধিগুলো সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা, যে নোটিশগুলো থাকা দরকার সেগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে কিনা সেগুলো তারা দেখবেন। আর আমাদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যারা মাঠ পর্যায়ে আছেন তারাও এই বিষয়গুলো মনিটর করবেন।
শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন অংশ নেন।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যায় কিনা- সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বসে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা বৈঠকে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।