না.গঞ্জ সদর থানায় ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ওসির দায়িত্ব গ্রহণ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪  : নারায়ণগঞ্জের সদর মডেল থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেছেন সাবেক দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি শাহ জামান। তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রয়েছে। ২৭ নভেম্বর শুক্রবার তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

ওসি শাহ জামান বলেন, প্রথম দিন যোগদান করলাম, সব অফিসারের সঙ্গে আলোচনা ও পরিচয় পর্ব শেষ করেছি। আশা করছি, আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করবো।

এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-৪ এর বিচারক তাবাসুম ইসলামের আদালতে কর্মজীবী এক নারীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সেই সময়ের ওসি শাহ জামানসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।  মামলাটি করেন কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ এলাকার এক নারী।

তিনি মামলার অভিযোগ করেন, গত ৩০ জুন কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশের সোর্স রাহাতের সহযোগিতায় বিউটি পার্লার থেকে মীরেরবাগ বাসায় ফেরার পথে রাতে তাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রাখেন শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, তুহিন রেজা, পুলিশের সোর্স রাহাত ও তেলঘাটের জিএম সারোয়ার। পরে তারা তাকে ধর্ষণও করেন। পরে তিনি ধর্ষকদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে গত ৫ জুলাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ও জিএম সারোয়ার কেরানীগঞ্জে প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের পক্ষ নিয়ে ওই মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে মামলা তুলে নিতে তাকে চাপ দেন। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জ থেকে আবার অপহরণ করে গত ২১ জুলাই রাজধানীর বিজয় নগরের একটি সাত তলা ভবনে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, পরে আবার আসামি ইকবাল হোসেন, তুহিন রেজা, পুলিশের সোর্স রাহাত, জিএম সারোয়ার, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র), শাহদাত হোসেন, ওসি আশিকুর রহমান (তদন্ত) এবং ওসি শাহ জামান তাকে অপহরণ করে রাজধানীর বিজয় নগর এলাকার একটি ভবনের একটি কক্ষে আটকে রেখে মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন এবং অনেকগুলো কাগজে সই করিয়ে নেন। সেই সঙ্গে সেখানেও বাদীকে দুই দিন আটক রেখে দ্বিতীয় দফায় আসামিরা ধর্ষণ করেন। পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পুলিশকে তদন্তে করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত জিসা মনি কাণ্ডে আলোচিত সমালোচিত সদর মডেল থানার ওসি মো.আসাদুজ্জামানকে ২৫ নভেম্বর বুধবার বদলি করা হয়েছে। আসাদুজ্জামানকে পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) ঢাকার মালিবাগে বদলি করা হয়েছে। তার স্থানেই সদর থানায় ওসি হিসেবে যোগ দিয়েছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ওসি শাহ জামান।

এর আগে ইয়াবা সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির কারণে ২০১৯ সালের জুলাইতে বদলি করা হয় সদর থানার সাবেক ওসি কামরুল ইসলামকে। তিনি এখন কারাবন্দি। ওই বছরের ৩০ জুলাই আসাদুজ্জামান নারায়ণগঞ্জ সদর থানা যোগ দেন। এর আগে তিনি গাজীপুরে ছিলেন।

তাছাড়া গণধর্ষণের পর মৃত স্কুলছাত্রী জিসা মনি (১৫) জীবিত উদ্ধার হওয়ার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন আলোচিত উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে, এসআই শামীম প্রত্যাহার হলেও ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামানও। এসআই শামীম ওসি আসাদুজ্জামানের সঙ্গে পরামর্শ এবং আলোচনা করেই সব করেছেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত