মৃত্যুর ৬ বছর পর আদালতে জীবিত হা‌জির, ভুল প্রতিবেদনে ৬ জনের কারাভোগ!

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( আদালত পাড়া সংবাদ দাতা) :  নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানায় একটি অপহরণ, খুন ও গুমের অভিযোগ এনে করা হয়েছিল মামলা। চাক্ষুস স্বাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দীও দিয়েছে এক নারী ।এতে মামলার আসামী হয়ে বিভিন্ন সময়ে কারাভোগ ও রিমান্ডের শিকার হয়েছেন একই পরিবারের সদস্য ও খালাতো বোন সহ ৬ জন।এ ঘটনার ৬ বছরের মাথায় আদালতে হাজির খোদ মৃত ব্যক্তি! বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফতাবুজ্জামান এর আদালতে সেই মামুনকে হাজির করা হলে চাঞ্চল্যকর ঘটনার রূপ নেয় ।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ মে চাঁদপুরের মতলব নিজ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ হন। তখন কোন ডায়রী কিংবা অভিযোগ করা হয়নি। এরপর ছেলেকে না পেয়ে ঘটনার ২ বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে মেয়ের সাথে প্রেম করায় তার ছেলে মামুনকে অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে খুন এর অভিযোগ এনে ফতুল্লা থানায় মামলা করে বাবা আবুল কালাম। আসামী করা হয় মামুনের কথিত প্রেমিকা তসলিমা, তার বাবা রকমত আলী, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সাগর ও সাত্তার মোল্লা সহ ৬জনকে। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার এস আই মিজানুর রহমান। মামলার পরে সকল আসামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি আদালতে আসামীদের রিমান্ড চাওয়ার সময়ে আর্জিতে উল্লেখ করেন, খালাতো বোন তাসলিমা ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে বিষাক্ত শরবত পান করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়ে গুম করেছে।পরে মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি। নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করেন।

চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে, বিয়েতে রাজী না হওয়াতে বিবাদী ৬ জন মিলে মামুনকে কোমল পানির সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে সিএনজি চালিতা অটো রিকশা করে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। তবে কোথায় কিভাবে কি অবস্থায় রাখা হয়েছে সেটা জানা যায়নি।

এদিকে মামলাটির বিচার কাজও শুরু হয়। এরই মধ্যে আদালতে হাজির হন কথিত অপহৃত সেই যুবক। অথচ পুলিশ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, ওই অপহৃতকে হত্যার পর লাশ গুম করে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়েছে। আর সিআইডি তাদের দেওয়া চার্জশীটে বলেছেন, যুবককে অপহরণ করা হয়েছে। এসব কারণে গত ৪ বছর ধরেই মামলার আসামী হয়ে বিভিন্ন সময়ে কারাভোগ ও রিমান্ডের শিকার হয়েছেন খালাতো বোন সহ ৬ জন। মামলাটির বিচার কাজও সম্পন্নের পথে ছিল।

এ নিয়ে আবারও জিসা মনি কান্ডের পুনরাবৃত্তি হলো নারায়ণগঞ্জে। জিসা মনি নিজে আত্মগোপন করে থাকলেও ৫২ দিন পর সে ফিরে আসে। অথচ পুলিশের রিমান্ড ও আদালতে ৩ আসামী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন যেখানে উল্লেখ করা হয়, তারা তিনজন মিলে জিসা মনিকে ধর্ষণ করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দিয়েছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত