নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : পোশাক কারখানার মালিক হেলেনা জাহাঙ্গীর দেশে লকডাউন চলাকালে কারখানা চালু রাখা নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার পর সমালোচনার মুখে ক্ষমা চেয়েছেন। এক ফেসবুকে লাইভে তিনি পোশাক কারখানা চালুর সমালোচনাকারীদের সমালোচনার পর আরেক লাইভে এসে তিনি ক্ষমা চাইলেন। রবিবার তিনি বলেছেন, যেহেতু বিজিএমইএ বলেছে এখন কারখানা বন্ধ থাকবে।
শনিবারের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, গতকালের (শনিবার) লাইভ নিয়ে যারা আমার সমালোচনায় তোলপাড় শুরু করেছেন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি। হয়ত আপনাদের বোঝার ভুল, অথবা আমার বলার ভুল। ভুল দিয়েই মানুষের শুরু হয়। আমরা ভুল করি বলেই আমরা মানুষ। আমার কথাগুলো ছিল ওভারঅল সিচুয়েশন নিয়ে, আমি শ্রমিক, মালিক, সরকার কিংবা অন্য কারো পক্ষে বলিনি।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের ছুটি দিলাম, তাদের বলা হয়েছে যার যার অবস্থানে থাকতে। কিন্তু তারা চলে গেছেন গ্রামে। গ্রামে গিয়ে তারা যদি একটা দিন অপেক্ষা করতেন তাহলে এখনকার সিদ্ধান্তটা জেনে যেতেন। কিন্তু তারা সেখানেও থাকলেন না আবার চলে আসতে শুরু করলেন। একদিন পরে আসলে আমরা কখনও চাকরি খেতাম না।
নারায়ণগঞ্জের অন্তত তিনটি কারখানার মালিক হেলেনা জাহাঙ্গীর বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ছাড়াও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সদস্য।
শনিবার ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেছিলেন, আমাদের অনেক অর্ডার এখনও হাতে রয়ে গেছে, আমরা ইচ্ছা করলেই গার্মেন্টস বন্ধ করতে পারি না। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক জনগণ বলছে, আমরা করোনায় মরতে চাই, আমরা না খেয়ে মরতে চাই না। আমরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় মরতে চাই না, আমরা ভাইরাসে মরতে চাই। আপনারা যারা মালিকদের নিয়ে তর্কবিতর্ক করেন, এই কথাগুলো কি আপনারা শোনেন না? আপনাদের তো আসলেই শোনা উচিত যে, আসলে জনগণ কী বলছে। জনগণের খাবারটা কে দেবে? আপনারা যারা বড় বড় কথা বলেন সোশ্যাল মিডিয়াতে, আপনারা কি জনগণের খাবার দিচ্ছেন? আপনারা ১০টা শ্রমিকের খাবার দেবেন না, একশটা শ্রমিকের বেতন নিশ্চয় দেবেন না। সো, আপনারা বড় কথা বলতে আসবেন না। যারা শ্রমিক পালে, যারা গার্মেন্টস চালায়, তারাই শ্রমিকদের বেতন দেবে, তারাই ভাতা দেবে।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের এমন আপত্তিকর বক্তব্যের পর ফেসবুকে অনেকেই এই ভিডিও শেয়ার করে ব্যাপক সমালোচনা করেন।
এদিকে, দেশে কার্যত লকডাউন চলাকালে হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক পায়ে হেঁটে ঢাকা আসেন। এই চিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার রাতেই সব কারখানা মালিককে আবার ছুটি ঘোষণা করার আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক। তারপর কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেন বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানও।