নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : আমানত সুরক্ষা আইন ২০২০-এর নামে সরকার ব্যাংক লুটের দায় মুক্তি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য কমরেড আবু হাসান টিপু। ২৭শে ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার চাষাঢ়াস্থ পার্টির জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পার্টির কর্মী সভাতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, প্রস্তাবিত আইনানুসারে কোন আমানতকারীর আমানতের পরিমান যাই হোকনা কেন তার আমানত গচ্ছিত রাখারা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি অবসায়িত (বন্ধ) হলে তিনি সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতি পূরণ পাবেন। এমন কি ওই প্রতিষ্ঠানে তার একাধিক অ্যাকাউন্টে ১ লাখ টাকার বেশি থাকলেও তিনি সর্বোচ্চ ঐ০১ লাখ টাকাই পাবেন। যা আমানতকারীদের সাথে আইন করে প্রতারণার সামীল।
আবু হাসান টিপু বলেছেন, এই আইনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ, লাভবান হবে অসৎ ব্যাংক মালিক আর ঋণগ্রস্ত ও জনবিচ্ছিন্ন সরকার। তিনি বলেন, এই অপতৎপরতা আর্থিকখাতে সরকারের চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও নৈরাজ্যেরই বহিঃপ্রকাশ। সরকারের অকার্যকরি ভূমিকার কারণে প্রতিবছর ৭৫ হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে, প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার নতুন নতুন ঋণ খেলাপি তৈরী হচ্ছে। এসব রোধ করতে সরকারের অর্থবহ কোন পদক্ষেপ নেই। উল্টো ঋণ খেলাপিদের কাছ থেকে টাকা আদায় না করে তাদের আরও সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আবার ঋণের সুদহার কমাতে গিয়ে আমানতের সুদ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে এমন কি ইতোমধ্যে ডাকঘর সঞ্চয় স্কীমে সুদের হারও অর্ধেকে নামিয়ে এনে গ্রামাঞ্চলের স্বল্প আয়ের অসহায়, অবসরে যাওয়া এবং একেবারে নিম্নবিত্ত সাধারণ মানুষকে বাড়তি দুর্ভোগ ও দুর্গতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতিতে সরকারের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের কারণে সাধারণ মানুষ, ছোট ছোট বিনিয়োগকারীরা যেমন শাস্তি পেতে পারেনা তেমনি সরকারের ভুল নীতি ও আইনের খেসারতও সাধারণ মানুষ দিতে বাধ্য নয়। তিনি অনতিবিলম্বে প্রতিটি গ্রহকের সম্পূর্ণ গচ্ছিত আমানত ফিরিয়ে দেয়ার বিধান রেখে আমানত সুরক্ষা আইন ২০২০-এর সংশোধন এবং ব্যাংক আমানতের সুদের হারসহ ডাক ঘর সঞ্চয় স্কীমের সুদের হার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সভাতে অন্যান্যের মধ্যে এসময় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী রাশিদা বেগম, শ্রমিক নেতা সাইফুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, সুমন হাওলাদার, হেলীম সরদার, মোহাম্মদ আলী প্রমূখ।