নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত প্রতিবন্ধী সিরাজকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার ভাই ও এলাকাবাসী। এদিকে তার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রোববার বেলা ১১টায় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। তাদের দাবি, সিরাজের ডিভোর্স স্ত্রীর স্বামীর ভুল তথ্যেই গণপিটুনি খেয়ে নিহত হতে হয়েছে তাকে। গেল শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্বপাড়া আল-আমিন নগর এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে নিহত হন সিরাজ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে শামসুন্নাহারের সঙ্গে বাক প্রতিবন্ধী সিরাজের বিয়ে হয়। তাদের ৬ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। চার ভাই ৩ বোনের মধ্যে সবার বড় সিরাজ। বাক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও কখনো কারো সঙ্গে বিাবদে জড়াতো না সিরাজ। বাড়ির অন্যান্যদের বোঝা না হয়ে নিজেই রাজমিস্ত্রীর সহযোগী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন। এক বছর পূর্বে এলাকার বিদ্যুৎ মিস্ত্রী আ. মান্নান ওরফে সোহেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে তার স্ত্রী শামসুন্নাহার। এক পর্যায়ে উভয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। সেই সময় কন্যা মিনজুকেও সঙ্গে নিয়ে যায়।
এরপর সম্ভাব্য সব স্থানে স্ত্রী-কন্যার সন্ধান চালান সিরাজ ও তার স্বজনরা। কিন্তু কোন হদিস পাননি। ৫ থেকে ৬ মাস পূর্বে স্ত্রী শামসুন্নাহার ডিভোর্স লেটার পাঠান সিরাজকেহ। সেই থেকে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন সিরাজ। স্ত্রীকে না পেলেও নিজে নিজে কন্যাকে সন্ধান করতে থাকেন। কিছুদিন পূর্বে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি আল আমিন নগর এলাকায় কন্যার সন্ধান পান সিরাজ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গেল শনিবার কন্যা মিনজুকে দেখতে গিয়েছিলেন সিরাজ। নিজের কাছে টাকা না থাকায় বাসার পাশের এক দোকানদারের কাছ থেকে ১০০ টাকা ধার নেয়। এ টাকা দিয়ে মেয়ের জন্য চুড়ি ও লিপিস্টিক কিনে তাকে দেখতে যায় সিরাজ।
এদিকে মেয়ের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তার স্ত্রীর বর্তমান স্বামী আব্দুল মান্নান ওরফে সোহেল তাকে দেখে ফেলে। সে সময় আব্দুল মান্নান গলাকাটা বলে চিৎকার করলে এলকাবাসী সিরাজকে গণধোলাই দেয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
প্রসঙ্গত, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো এলাকার ঠিকাদার মোহর চানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সিরাজ। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলার লালমোহন থানার মুগিয়া বাজার এলাকায়। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।