নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : জামালপুর পৌরসভার রশিদপুর গ্রামের মাহমুদুল হাসান মারুফ (১৭) নামের এক কলেজ ছাত্র এসিড নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এসিডে তার মুখমণ্ডল ও কাঁধ ঝলসে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিবেশী ভাবনা আক্তার রিয়া নামের এক কলেজছাত্রীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ওই ছাত্রী ও তার মা হাসি বেগম সুজেদাকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
জানা গেছে, জামালপুর পৌর এলাকার রশিদপুর গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে মাহমুদুল হাসান মারুফ জামালপুর সরকারি টেকনিকেল স্কুল এন্ড কলেজে ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজির প্রথম বর্ষের ছাত্র। একই গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে ভাবনা আক্তার রিয়া কিছুদিন ধরে মাহমুদুল হাসান মারুফকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রিয়া মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া বঙ্গবন্ধু কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তাদের মধ্যে মাঝেমাঝে ফোনে কথাও হতো। মারুফ গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তার এক বন্ধু সাইফুল ইসলামকে সাথে নিয়ে রিয়াদের বাড়ির সামনে দিয়ে আরেক বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছিল।
এ সময় রিয়া তাকে ডেকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে ঘরের বৈদ্যুতিক লাইনের ত্রুটি সারাতে বলে। তখন ওই বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। মারুফ দিনের বেলা এসে ঠিক করে দিবে বলে চলে যেতে চায়। কিন্তু রিয়া তাকে ঘরে যেতে বললে মারুফ অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় আকস্মিক মারুফের মুখে এসিড ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটে। মারুফ তখন চিৎকার দিয়ে দৌড়ে স্থানীয় রশিদপুর বাজারে যায়। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। এসিডে মারুফের দুই চোখ ছাড়া মুখমণ্ডলের বেশিরভাগ স্থান ঝলসে গেছে।
তার ডান কাঁধেও সামান্য এসিড দগ্ধ হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়েছে। জামালপুর সদর থানা পুলিশ গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রিয়া ও তার মা হাসি বেগম সুজেদাকে রশিদপুরের বাড়ি থেকে আটক করেছে। এ ঘটনায় ভিকটিম মারুফের বাবা দুদু মিয়া বাদী হয়ে এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনে শুক্রবার দুপুরে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ভাবনা আক্তার রিয়া ও তার মা হাসি বেগম সুজেদাকে আসামি করা হয়েছে।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. মো. শফিকুজ্জামান বলেন, ভিকটিম এসিড দ্বারাই আক্রান্ত হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছিমুল ইসলাম বলেন, মারুফ নামের কলেজছাত্র এসিড নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আটক ভাবনা আক্তার রিয়া ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে এসিড নির্যাতনের স্বীকার মারুফের স্বজনরা জানায়, ঢাকা মেডিকেলের বান ইউনিটে সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।