আজ কাঁচপুর সেতু ও ভুলতা ফ্লাইওভার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : আজ শনিবার ( ১৬  মার্চ ) দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু ও ভুলতা ফ্লাইওভার উড়াল সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে সেতু দুইটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষনা করবেন তিনি। সেতুগুলো উদ্বোধনের ফলে মহাসড়কের যানজট কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ উদ্বোধন নিয়ে বেশ আগ্রহে রয়েছেন এই পথে চলাচলরত চালক, যাত্রী সহ সর্বস্তরের মানুষ।

বাংলাদেশের দুটি প্রধান নগর রাজধানী ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এতে অতিক্রম করতে হয়েছে শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গোমতী নদী। ফলে ১৯৭৭, ১৯৯১ ও ১৯৯৫ সালে শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গোমতী নদীর উপর দিয়ে নির্মাণ করা হয় ২ লেন বিশিষ্ট কাঁচপুর সেতু এবং ২ লেন বিশিষ্ট মেঘনা ও গোমতী সেতু। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতু, মেঘনা দ্বিতীয় সেতু ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়।

সরেজমিনে কাঁচপুর সেতুতে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর সব ধরনের নির্মাণকাজ শেষ। চার লেনের মধ্যে বসেছে সড়ক বিভাজক। পথচারীদের জন্য আছে প্রশস্থ ওয়াকওয়ে। উদ্বোধন না হওয়ায় সেতুর দুই পাশ বর্তমানে আটকে রাখা হয়েছে।

কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতু পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক আবু সালেহ মো. নুরুজ্জামান জানান, চার লেনের নতুন কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুটির ভিত্তি কংক্রিটের ঢালাই এবং ৫টি পিলারের ওপর স্টিল গার্ডারের। ১০০ বছরের স্থায়িত্ব নির্ধারণ করে নির্মাণ করা সেতুটির ঠিকাদার যৌথভাবে জাপানি চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান- ওবায়শি, শিমিজু, জেএফআই ও আইএইচআই। আর সেতুর উপ-ঠিকাদার বাংলাদেশের মীর আকতার হোসেন। মূল সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় ১ হজার ৩০০ কোটি টাকা। মোট ব্যায়ের ৭৫ ভাগের যোগান দেয় জাইকা। আর ২৫ ভাগ অর্থ ব্যয় হয় বাংলাদেশ সরকারের। নতুন এ সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৯৭ দশমিক ৩০ মিটার। প্রস্থ ১৮ দশমিক ১ মিটার।

আবু সালেহ মো. নুরুজ্জামান বলেন, কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় ১০ মার্চ উদ্বোধন সম্ভব হয়নি। তবে ১৬ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী কাঁচপুর সেতুর উদ্বোধন করবেন। মে অথবা জুনের মধ্যে মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুরও উদ্বোধন করবেন তিনি। মেঘনা দ্বিতীয় সেতুর ৮৫ ভাগ ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুর কাজ ৮৪ ভাগ শেষ হয়েছে।

অপরদিকে, রূপগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা সিলেট মহা-সড়কের ভুলতা এলাকার যানজট নিরসনে লক্ষ্যে ৩৫৩.৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪ লেন বিশিষ্ট ৩ তলা ভুলতা ফ্লাইওভার একটি মেগা প্রকল্প। এশিয়ান হাইওয়ের (বাইপাস) ভুলতা ফ্লাইওভার উড়াল সেতুর গাজীপুর-মদনপুর সড়কের একটি লেন এটিও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ২৪০ কোটি টাকা ব্যায়ে ৪ লেন বিশিষ্ট ভুলতা ফ্লাইওভার উড়াল সেতুটি নির্মাণে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সাক্ষর করেছিলো সরকার। বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ফ্লাইওভারটি নির্মাণের কাজ পেয়েছিলো চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানী স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও এ এম বিল্ডার্স। চার লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হবে ১ দশমিক ২৩৮ কিলোমিটার। মূল ফ্লাইওভারের নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা, সড়ক নির্মাণে ব্যয় ১১২ কোটি টাকা এবং অন্যান্য ব্যয় ধরা হয় সাড়ে সাত কোটি টাকা। সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পটির মেয়াদ আরো ১ বছর বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে চলতি বছরের ৮ আগষ্ট ফ্লাইওভারটি নির্মানে আরো ৫৮ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার ৪৮৬ টাকা বৃদ্ধি করে মন্ত্রীসভা।

পাট ও বস্ত্রী মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, চার লেন বিশিষ্ট ৩ তলা ফ্লাইওভারটির এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) কাঞ্চন-মদনপুর সড়কের ফ্লাইওভারটির পুরো সম্পন্ন হয়েছে। ফ্লাইওভারটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ফ্লাইওভারটির কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অতিদ্রুত  ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ফ্লাইওভারটিও উদ্বোধন করা হবে। আর ওই অংশ টুকু চালু করা হলে এখানে কোন যানজট থাকবে না।

add-content

আরও খবর

পঠিত