নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণের জন্য বিভিন্ন স্কুলে চলমান অতিরিক্ত ফি আদায়ের হিড়িক। অভিযোগ রয়েছে, প্রতি বছরই ফি আদায় নিয়ে নিয়মের মধ্যেই চলছে এ অনিয়ম। কোচিং ফি, উন্নয়ন ফি ইত্যাদির নামে বোর্ড নির্ধারিত ফিয়ের চেয়ে দ্বিগুণ থেকে পাঁচ গুণ পর্যন্ত বেশি টাকা আদায় করা হয়ে থাকে। অথচ এই বাড়তি টাকা আদায়ের কোনো রশিদ শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় না। এ নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঝে মাঝে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা প্রতিবাদও করেছে। বহুবার পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের এই প্রতারণা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে ফতুল্লা থানাধীন কাশীপুর ইউনিয়নের হাজ্বী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পরিক্ষার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ফি। যা সরকার নির্ধারিত ফি এর চাইতে স্কুলে দেড় গুণ টাকা। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল্লাহ বাদল। যার ছত্রছায়ায় ক্ষমতার প্রভাবকে পুজিঁ করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বোর্ড নির্ধারিত বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ১৫৬৫ টাকার পরিবর্তে নিচ্ছে ২৪৯০ টাকা এবং জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত বেতন, মডেল টেষ্ট ও অন্যান্য বাবদ নিচ্ছে ১৪৬০ টাকা, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য ১৪৪৫ টাকার পরিবর্তে নিচ্ছে ২২৯০ টাকা এবং জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত বেতন, মডেল টেষ্ট ও অন্যান্য বাবদ নিচ্ছে ১৪৬০ টাকা। সে হিসেবে বিজ্ঞান বিভাগে সর্বমোট ৩৯৫০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩৭৫০ টাকা নিচ্ছে। আমাদের স্কুলটিতে সাইফুল্লাহ বাদল স্যার দায়িত্বে আছেন তিনি চাইলে এটা বন্ধ করতে পারে। আমাদের মত নি¤œ পরিবারের মানুষদের জন্য এ অতিরিক্ত টাকা বহন খুবই কষ্টকর। বর্তমান সরকার শিক্ষার ব্যাপারে সহনশীল হওয়ার পরেও একশ্রেণীর লোক যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই আমরা এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), জেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষন করে জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই অবস্থা বিরাজমান। যেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এতে করে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তাগণ। অথচ এরআগে বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। অতিরিক্ত ফি এর টাকা ফেরত সহ জরিমানা করতেও দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হুমায়ূন কবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে না। শুধু তিমাসের ফি নেয়া হচ্ছে। এটা কি কোচিং ফি নিচ্ছেন এমন প্রশেরœ জবাবে তিনি বলেন, জি না এটা তিন মাসের জন্য বেতন। ইউএনও ম্যাডাম আমাদের ডেকে নিয়েছেন তিনি যেভাবে বলেছেন, সেই টাকাই নেয়া হচ্ছে। রশিদের ব্যপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। প্রতি বছরই শিক্ষার্থীদের কাছে এধরণের অভিযোগ শুনা যায় কেন? তিনি বলেন, এর আগে উত্তম স্যার এ ব্যাপরে অভিযুক্ত ছিলো। যা পরে ফেরত দিয়ে দিয়েছে। সাইফুল্লাহ বাদলের এ ব্যপারে কোন হস্তক্ষেপ নাই। তিনি ফ্রি কোচিংয়ের জন্য বলেছেন।