নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রির্পোটার ) : নারায়ণগঞ্জে হঠাৎ করেই যেন মারমুখী হয়ে উঠেছে পুলিশের কিছু সদস্য। অপরাধ সনাক্ত না করেই কিল, ঘুশি, লাথি দিয়ে করা হচ্ছে প্রকাশ্যেই বেদারক মারধর। মঙ্গলবার বিকেলে নগরীতে এমন কিছু চিত্রই ফুটে উঠে জনসম্মূখে। সময় বিকাল সাড়ে ৫টা। সরকারী মহিলা কলেজ সংলগ্ন রেল লাইন ঘেসে ধর ধর বলে একজনের পিছনে দৌঁড়াতে দেখা যায় এক পুলিশ সদস্যকে।
এসময় পুলিশকে সহায়তা করতে ওই ছেলেটিকে আটক করে পুলিশের কাছে দেয় স্থানিয়রা। তবে কি কারণে তার পিছনে দৌড়াচ্ছিলেন স্থানিয়দের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সদস্য বলেন সন্দেহ হয়েছে তাই। এই বলেই জনসম্মূখে তাকে ৩-৪ জন পুলিশের সদস্য তাকে বেদারক মারধর করতে থাকে। পরে স্থানীয় কয়েকজন মারধর না করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বললে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ কাজল।
কিন্তু স্থানিয়রা ওই যুবককে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে আমি লোহার মার্কেটে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছি। আমাকে পুলিশ থামিয়ে চেক করেছে কিন্তু কিছু পায়নি। পরে আমাকে ডাক বাংলয় নিয়ে মারধর করে। ফোন রেখে দেয়। আবারো মারধর করে। একপর্যাায় আমি তাদের মারধরের থেকে বাচঁতে দৌড় দেই।
এ বিষয়ে জানতে ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা ফতুল্লা মডেল থানার এএসআই সুর্দশনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানায়, আসলে ওই পুলিশটি নতুন এসেছে তো, তাই বুঝতে পারেনি। আমি ওই ছেলেটিকে তার মা ও বোনের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি।
এদিকে একই দিনে বিকাল সাড়ে ৪টায় শহরের আল্লামা ইকবাল রোড এলাকায় ঢুকে ব্যাটারী চালিত রিক্সা থামিয়ে চালক ও যাত্রীকে মারধর করে ডাক বাংলয় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ এনামুল। পরে এখানেও স্থানিয়রা এগিয়ে প্রতিবাদ করলে কৌশলে পালিয়ে যায় ট্রাফিক পুলিশের এই সদস্য এনামুল।
চালক জানায়, অটো রিক্সা সড়কে উঠা নিষেধ তাই আমরা এলাকা দিয়ে চালাই। কিন্তু যাত্রীকে নামানোর জন্য আমি আল্লামা ইকবাল রোড এলাকার তোলারাম কলেজের সামনে থামলে। ওই ট্রাফিক পুলিশ আমাকে টাকা দিতে বলে এবং ডাকবাংলর সামনে যেতে বলে। টাকা দিতে অস্বিকার কওে আমি না যেতে চাইলে আমাকে কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে এবং আমার চাবিটি ছিনিয়ে নেয়। পরে আমার গাড়ির চাকাগুলি ছিদ্র করে দেয়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক ইনর্চায একেএম মো.শরফুদ্দিন জানায়, আমি বিষয়টি যেহেতু জেনেছি তারসাথে কথা বলব। অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কারণ কেউ অপরাধ করলে আমরা সবসময়ই আইনগত ব্যবস্থা নেই। আইনের উর্ধ্বে কেউই না।
এদিকে জঙ্গি দমন ও মাদক সহ বিভিন্ন অভিযানে পুলিশের সাফল্যগাথা শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও হচ্ছে প্রশংসিত। কিন্তু ওই পুলিশেরই কতিপয় সদস্যের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীকে দুর্নামের ভাগিদার হতে হচ্ছে, ম্লান হচ্ছে অর্জনের ভাবমূর্তি। তাই দায়িত্বের পাশাপাশি পুলিশকে মানবিক ও আচরণে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন জনসাধারণ।
সচেতন মহল মনে করেন, কতিপয় পুলিশের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত ঘটনা ঘটছে। এগুলি অহরহই হচ্ছে। অথচ এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এর সীমাবদ্ধতার জায়গাগুলোও যথাযথভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে না। যেকারণে পুলিশ বিভাগকে নেতীবাচকভাবে নিচ্ছে না অনেকেই। তাই উর্ধ¦তন কর্মকর্তাদের ওইসব পুলিশ সদস্যদের বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা নিয়ে প্রশিক্ষন দেয়া একান্তই জরুরী বলে মনে করেন।