ভাষা সৈনিক খান সাহেব এম ওসমান আলীর ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : অবিভক্ত বাংলার এম.এল.এ বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রশংসিত সবুজ বাংলা পত্রিকার সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ৫২ বাংলা ভাষা আন্দোলনের নির্যাতিত সৈনিক নারায়ণগঞ্জ এর খান সাহেব এম.ওসমান আলীর ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে  ১৯ শে মার্চ  সোমবার ২০১৮ইং তারিখে তার নিজস্ব বাসভবন নারায়ণগঞ্জের “বাইতুল আমান” চাষাঢ়ায় এবং তাহার প্রতিষ্ঠিত জামালকান্দি ওসমানিয়া হাইস্কুল, দাউদকান্দি,কুমিল্লায়,কোরআন খানী,মিলাদ মাহিফল,কাঙ্গালী ভোজ,বস্ত্র বিতরন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বাদ যোহর উক্ত মিলাদ মাহফিলে বন্ধু-বান্ধব,আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহীরে উপস্থিত থাকিয়া মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে,মরহুমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দুঃখীদের মধ্যে বস্ত্র বিতরন এবং জয়পুর হাট (বগুড়া) সাইয়েদীনা মোহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ্(সাঃ) দীনে মারকাদ এতিমখানা এবং মিরপুর নুরে মদীনা আজমেরী দরবার শরীফ এতিমখানায় কোরআন শরীফ খতম ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য , নারায়ণগঞ্জেরই কৃতী সন্তান ছিলেন ওসমান আলী। তিনি একাধারে ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ,সাংবাদিক, ব্যবসায়ী এবং একজন শিক্ষানুরাগী এমএলএ। ছাত্রজীবনে ১৯২০ সালে কলকাতায় বেকার হোস্টেলে থাকতেন।সে সময়ে তরুণ ব্যারিস্টার শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের ইংরেজিতে তুখোড় বক্তৃতা শুনে ওসমান আলীসহ অনেকেই মুগ্ধ হন। পরবর্তীতে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ও সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন এবং ডিগ্রি পরীক্ষা বর্জন করেন।শুধু তাই নয়, ডিগ্রি পাস করে তত্কালীন মুসলমান কোটা অনুযায়ী লোভনীয় সরকারি চাকরি,বিশেষত শেরে বাংলার সহযোগিতায় সাব রেজিস্ট্রি অফিসের চাকরির সুযোগ গ্রহণ না করে বরং তিনি সাংবাদিকতা এবং ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি শিল্প এবং সাহিত্যে অনুরাগী ছিলেন।

যার ফলে ৩০-এর দশকে সাংবাদিক হিসেবে নারায়ণগঞ্জ থেকে ‘সবুজ বাংলা’ নামে মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন।ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কিছুদিন এই পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। সেই সময়ে ওসমান আলী রচিত আট ইয়ারের বৈঠক নামক ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন সাহিত্যিক গল্প প্রকাশ করতে থাকেন।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ,অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর,বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল, সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমেদ,কবি বেনজীর আহমেদ,পল্লীকবি জসিম উদ্দীন,বন্দে আলী মিয়া,সাহিত্যিক মোহিতলাল মজুমদার, আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখের রচনায় সমৃদ্ধ ছিল সবুজ বাংলা।পাট ব্যবসার কেন্দ্র এইরূপ সমৃদ্ধ ‘সবুজ বাংলা’র প্রকাশক ওসমান আলীকে বিশ্বকবি লিখেছিলেন: ‘ভেবেছিলুম নারায়ণগঞ্জ শহরটি একটি ব্যবসা কেন্দ্র।

কিন্তু এখান থেকেও সুন্দর সাহিত্য প্রকাশনা দেখে মুগ্ধ হলুম। সবুজ দেশের অঙ্গে অঙ্গে সবুজ বাংলা মুখরিত হয়ে উঠুক, এই কামনা করি’।আশীর্বাদক শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সবুজ বাংলার কার্যালয় ছিল নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়াস্থ তার নিজস্ব বাসভবন ‘বাইতুল আমান’।কবি-সাহিত্যিকদের নিয়মিত প্রকাশনা ছাড়াও তখন প্রায়ই কবি-সাহিত্যিক এবং সংগীতের আসর বসতো এই বাইতুল আমানে। কবি জসিম উদ্দীন এবং সংগীত স¤্রাট আব্বাসউদ্দীন এই আসরে প্রায়ই আসতেন।সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি অত্যন্ত শিক্ষানুরাগীও ছিলেন।১৯৩৮ সালে তার নিজ জেলা কুমিল্লার জামালকান্দিতে তিনি ওসমানিয়া হাইস্কুল ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত