নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সাথে আলোচনা করে স্থায়ী বন্ধোবস্ত না হওয়া সময় পর্যন্ত সাময়িকভাবে হলিডে মার্কেটের প্রস্তাব জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান। তিনি বলেছেন, হলিডে মার্কেটের ন্যায় শুক্র ও শনিবার এবং অন্যদিন গুলোতে বিকেল ৫টার পর হকারদের ফুটপাতে বসতে দেওয়ার অনুমতি চাইবো। প্রয়োজনে মেয়রের হাতে ধরে রাজি করাবো। তবে অনুমতি পাওয়া গেলে কেবলমাত্র তালিকাভুক্তরাই আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী নিদিষ্ট সময় মেনে আমরা ফুটপাতে দোকানদারি করতে পারবে। ১ লা ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে হকার নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে চলমান হকার সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এমপি সেলিম ওসমান। সেই লক্ষ্যে প্রথমেই শহরে প্রথমেই শহরে হকারদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করার জন্য প্রত্যেকজন হকারের নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল, নাম্বার, ব্যবসার ধরন, পূর্বের দোকান বসার স্থান, ও ছবি একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা জমা দেওয়ার কথা বলেন। এ কথার প্রেক্ষিতে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুতের জন্য ২ দিনের সময় চায় হকার নেতৃবৃন্দরা।
হকার তালিকা প্রস্তুতের ব্যাপারে এমপি সেলিম ওসমান আরো বলেন, কোন অবস্থায় যেন কোন কর্মচারী বা আত্মীয় স্বজনের নাম সংযুক্ত করে ওই সংখ্যা বৃদ্ধি না করা হয়। যারা বর্তমানে শহরের বিভিন্ন সড়কে দোকানপাট বসিয়ে ব্যবসা করছেন তাদেরকে এই তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করতে হবে। যদি তারা তালিকা ভুক্ত না হয় তাহলে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারীর পর কোন অবস্থাতেই তারাও ফুটপাতে বসতে পারবে না। হকারদের কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাওয়ার পর তিনি পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবেন। প্রথমাবস্থায় স্থানীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূর্ণাবাসন করা হবে। পর্যায়ক্রমে তালিকাভূক্ত বাকিদের পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে স্থায়ী পূর্ণবাসনের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ।
তাই উক্ত সময়ে মানবিক দিক বিবেচনায় তিনি প্রস্তুতকৃত পূর্ণাঙ্গ তালিকাটি পাওয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করবেন। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সাথে আলোচনা করে স্থায়ী বন্ধোবস্ত না হওয়া সময় পর্যন্ত সাময়িকভাবে হলিডে মার্কেটের ন্যায় শুক্র ও শনিবার এবং অন্যদিন গুলোতে বিকেল ৫টার পর হকারদের ফুটপাতে বসতে দেওয়ার অনুমতি চাইবো। প্রয়োজনে মেয়রের হাতে ধরে রাজি করাবো। তবে অনুমতি পাওয়া গেলে কেবলমাত্র তালিকাভুক্তরাই আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী নিদিষ্ট সময় মেনে আমরা ফুটপাতে দোকানদারি করতে পারবে। তবে মেয়রের অনুমতি ছাড়া কোন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে দোকান বসাতে সম্পূর্নভাবে নিষেধ করেছেন।
হকারদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেছেন, পূর্নাঙ্গ তালিকা পাওয়ার পর ঢাকার বঙ্গবাজারের মত হকারদের জন্য একটি মার্কেট নির্মাণের চেষ্টা করবো। তবে সেটা সময় সাপেক্ষ। মার্কেট না হওয়া পর্যন্ত তোমরা কোন প্রকার আন্দোলনে না গিয়ে শান্তিপূর্ন পরিবেশ বজায় রাখবে। পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাওয়ার পর ওই তালিকা মোতাবেক নারায়ণগঞ্জের ডিসি, এসপি, মেয়র, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রয়োজনে শহরে বসবাসকারী সাধারণ মানুষদের সাথে আলোচনা করে একটি সুষ্ঠু সমাধানের ব্যবস্থা করবো। এ ব্যাপারে আমি সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। এ সময় সভায় উপস্থিত হকার নেতৃবৃন্দ তাঁর প্রস্তাবে একমত পোষন করে হকাররা আন্দোলন পরিহার করে শহরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, পরির্দশক আব্দুল রাজ্জাক, নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আসাদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম মুন্সি সহ অর্ধশতাধিক হকার।