হকার ইস্যুতে আইভীর হুশিয়ারী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নাসিক মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সড়কে কোন হকার বসতে দেয়া হবে না। শহরের প্রধান এই সড়ক হকারমুক্ত রাখতে প্রয়োজন হলে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামবো। মুষ্ঠিমেয় কিছু হকারের জন্য কয়েক লাখ মানুষকে কস্ট দিতে পারি না। ৫ লাখ নগরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র বানিয়েছে। তাদের কাছে আমার দায়বদ্ধতা আছে। কেউ যদি হকার বসাতে চায় সে যদি এসপি ডিসিও হয় তাহলে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আমি তাদের বিপক্ষে দাঁড়াবো। তবুও বঙ্গবন্ধু সড়ক হকারমুক্ত রাখবো। তিনি আরো বলেন, হকার্স মার্কেট করে দিয়েছি।

সেখানে সাড়ে ৬ শত হকারকে পুর্নবাসন করা হয়েছে। কিন্তু পত্রিকায় দেখি এখন ৪ হাজার হকার। এত হকার আসলো কোথা থেকে? হকার্স মার্কেটে দোকান বরাদ্দ পাওয়ার পর তা অন্যের কাছে বিক্রি করে বা ভাড়া দিয়ে নিজেই এখন ফুটপাতে বসেছে। পত্রিকায় লেখা হয় ফুটপাত থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হয়। আমি বলতে চাই যারা এই টাকার ভাগ পায় তারাই হকারদের বসাতে চাচ্ছে। একজন মুন্সি (হকার নেতা) বলে গেছেন তিনি চাষাড়া পুলিশ ফাঁড়িকে চাঁদার ভাগ দেন।

উচ্ছেদ হওয়ার পর রোববার দুপুরে নগরভবনে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে স্মারক লিপি দিতে গেলে হকার নেতৃবৃন্দ ও বামদলের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইভী বলেন, শহরের মেট্টো হল থেকে শুরু করে কালিরবাজার পর্যন্ত টাকা ওঠে এক এমপির ছোট ভাইয়ের নির্দেশে। এর কিছু টাকা  পুলিশ নেয়,বাকিটা ওই এমপির ভাই নেয়। তখন হকারদের উদ্দেশ্য করে মেয়র বলেন, এই এমপির ছোট ভায়ের নাম কি? যে মাজারের ঘরটা দেখে। তার ঘরও আমি ভাঙাবো।

আইভী বলেন, কোন নেতা , কোন এমপি যদি দায়িত্ব নিয়ে হকার বসায়, বসাক। আমি সকল নারায়ণগঞ্জবাসীকে ডাক দিবো। ভোটারদেরকে বাদ দিয়ে নন ভোটারদেরকে এই শহরের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে দেব না। এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন পুলিশ তাদেরকে বসায় তাদের থেকে টাকা নেয়। এই মুন্সি (হকার নেতা) কিন্তু বলে গেছে চাষাড়া পুলিশ ফাঁড়ির পুশিশকে টাকা দিতে হয়ে। এবং ওরা সকলের কাছে বলে বেড়ায় পুলিশকে টাকা দিতে হয় এবং নেতাদের টাকা দিতে হয়। এই টাকা কিন্তু ফিক্সড, একটা পুলিশের এবং অন্যটা দলীয় নেতাদের দিতে হয়।

আইভী রহিম নামে এক হকার নেতাদের দেখিয়ে বলেন, এই যে রহিমকে জিজ্ঞেস করেন, ওর বাড়ি ঘর কোথায় জিঞ্জেস করেন। যতগুলো হকার নেতা এখানে আছে। প্রত্যেকের দোতালা তিন তালা বাড়ি ঘর আছে। গ্রামে তাদের ভাল অবস্থান, একজনও নারায়ণগঞ্জ শহরের ভোটারনা। প্রত্যেকের আইডি কার্ড চেক করে দেখেন ৪ হাজার এর মধ্যে খুঁজে ১০০ পাবেন কিনা সন্দেহ। আর যেই ১০০ হকার পাওয়া যাবে নারায়ণগঞ্জে তাদের দায়িত্ব আমার ।

এসময় মেয়রের কক্ষে উপস্থিত সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের পুলিশের মধ্যে ভাল খারাপ কিছু থাকতে পারে। আগে যারা ছিল তারা থাকবে না। আমাদের এসপি স্যারের নির্দেশ কোন হকার থাকেবে না। ফুটপাথ হকার মুক্ত থাকবে। এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি।

তখন আইভী বলেন, সকল হকারা বলে গেছে আমাদের একটা টাকা দিতে হয় চাষাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে। এটা আমরা সকলেই জানি। এবং কিছু সাংবাদিক নেতাকেও বলি, কিছু কিছু হাউজেও টাকা যায় এই হকারদের। সেই পত্রিকাগুলোর নাম আমি বললামনা। আমার এখান থেকেও আমার কর্মচারিরা টাকা নেয়।  কিছু শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করেছি। দেখেছি উচ্ছেদের সময় টেলিফোনে বলে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশন নিয়েছি। তিনজনকে বের করে দিছি। গবিন্দকে উচ্ছেদে পাঠাইনা। সে টাকা নেয়।

আইভী বলেন, এখন কতো সুন্দর মানুষ হাটতেছে কোন ঝামেলা নাই। আর সবচে বড় কথা তাদের আমি মার্কেট দিয়ে দিয়েছি। যাদের দোকান দিয়েছি তারা বেশিরভাগ দোকান বিক্রি করে ফেলেছে।  এখন যেখানে এদের দোকান দিছি সেখানে দোকান কিছু থাকবে না। পুরো জায়গা ওপেন কের দিবো। টং দোকান কিচ্ছু থাকবে না।  শিপট করে সবাই বসতে পারবে।

এসময় হকার নেতাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ নেতা সেলিম মাহমুদ, জেলা হকার্স লীগের সভাপতি রহিম মুন্সি, হকার্স সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আসাদুল ইসলাম প্রমুখ। উল্লেখ গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়। হকার উচ্ছেদে মেয়র পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত