আওয়ামীলীগের শুরু, বিএনপির শেষ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন ) : সরকার ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামীলীগ। বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল এটি। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এই সংগঠনটির নামাকরণ করা হয় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। ইতোমধ্যেই দলকে  আরও সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খলাবদ্ধ করে একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন অভিযান শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও শুরু হয়েছে সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন অভিযান। গত ৩০ ই জুলাই রবিবার জেলা আওয়ামীলীগ র্কাযালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে এ সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কর্মসূচী শুরু হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী চাঁদপুর-৩ আসনের এমপি ডা: দিপু মনি ও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

তবে বিএনপির আগে ক্ষমতাসীন দল এ কর্মসূচীটি শুরু করার ঘোষনা দিলেও নারায়ণগঞ্জের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছেয়ে রয়েছে আওয়ামীলীগ। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে, নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দিয়ে প্রতি তিন বছর অন্তর দলের সদস্যপদ নবায়ন করতে হয়। আর নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানও সময়-সময় করা হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অন্যদিকে কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী বিএনপি দলীয় নেতার্কমীরাও বেশ তোড়জোর করেই মাঠে নেমে শুরু করেছে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অভিযান। আর এ অভিযান সাফল্যমন্ডিত করতে নারায়ণগঞ্জে এসেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা ফখরুল, আব্দুল মান্নান ও শাহজাহান সহ অনেকেই। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন মামলায় ও গ্রেফতার আতংকে থেকেও থেমে নেই তাদের কর্মসূচী। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধেই এখন মামলার পাহাড়। জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে কম-বেশি শতাধিক মামলা ঝুলে আছে। তবে এ মামলার বোঝা বইয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সিংহভাগ সময়ই এখন কাটছে আদালত চত্তরে। এমন অবস্থা যেন অবরুদ্ধ বিএনপি, আদালত থেকে বের হতেই পারছেন না নেতাকর্মীরা। তারপরেও আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই কর্মসুচী পালনে প্রতিটি ওয়ার্ড চষে বেড়চ্ছে তারা।

রাজনৈতিক বোদ্ধাদের অভিমত, রাজধানীর র্পাশ্ববর্তী জেলা হিসেবে রাজনীতিতে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ। আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠায়ও ব্যপক ভূমিকা রয়েছে এই জেলার। আর বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বিশেষ অবদানে রয়েছেন ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের। কারণ আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠায় এই পরিবারটি ছিলো অতন্ত্র প্রহরী। এছাড়াও বর্তমান সাংসদ শামীম ওসমানের ভূমিকাও বেশ লক্ষনীয়। কিন্তু সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কর্মসূচী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অগ্রগতি অনেকটাই পিছিয়ে।

এ ব্যপারে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই জানায়, আমরা জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কর্মসূচীর উদ্বোধন হয়েছে। আর এসময় ডা: দিপু মনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন বিধায় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু উদ্ভোধন হয়েছে খুব শিঘ্রই শুরু হবে। আর মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী থাকায় এটা পিছিয়ে গেলেও আগামী সেপ্টেম্বর থেকে আমরা সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কর্মসূচীর অভিযান পরিচালনা শুরু করব।

জানা গেছে, গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি তাদের সাংগঠনিক সীমানায় ১ লাখ নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছেন। আর গত ৩০ জুলাই থেকে ৮০ হাজার নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩ লাখ র্পযন্ত। এদিকে ক্ষমতাসীন দল জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে লক্ষাধিক। সেক্ষেত্রে মহানগর বিএনপি ২ লাখ নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে তাদের আওতাধীন ১৭টি ওয়ার্ড ও ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কার্যক্রম শুরু করে দিলেও এখনো ২৭টি ওয়ার্ডে শুরু করতে পারেনি মহানগর আওয়ামীলীগ। তন্মধ্যে দলটির সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন ৪ লাখ আর সাধারন সম্পাদক এড. খোকন সাহা মাত্র ২৫ হাজার নতুন সদস্য করার অভিমত ব্যক্ত করায় এখন প্রকৃতপক্ষে মহানগর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে কত হাজার নতুন সদস্য সংগ্রহ করা হবে তা নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের শুরু করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এড. খোকন সাহা। কিন্তু তার পূর্বেই শেষ হয়ে যাচ্ছে বিএনপির দুই মাসব্যাপী সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচী।

এ ব্যপারে মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি এড.আবুল কালামের মুঠোফোনে করলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল জানায়, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কর্মসূচীটি বেশ বেগবানভাবে পরিচালনা করছি। আমাদের এই কর্মসূচীটি শেষ পর্যায় রয়েছে। এবং  নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে ইনশাল্লাহ। তারপরেও নেত্রী যদি নির্দেশ দেন আমাদের সময়সীমা বৃদ্ধি করে আমরা আরও বেশী সদস্য সংগ্রহ করতে পারবো।

add-content

আরও খবর

পঠিত