নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, আমি রাজনীতি করি তাই আপনাদের বলবো আপনারা আমার সাথে ঘৃণার রাজনীতি করবেন না। আমি এমপি ও মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। যারা আওয়ামীলীগকে নিয়ে খেলতে চায় তারা আসেন আমি শামীম ওসমান খেলতে প্রস্তুত আছি। আমার দলের হউক অথবা অন্য দলের হউক আসেন আমি খেলবো। আমি রাজনীতি করবো, তাই মাঠে খেলার জন্য আমি সব সময় প্রস্তুত। আমি শেখ হাসিনার ইশারায় কাজ করি কাউকে ভয় পেয়ে কথা বলি না।
সোমবার ২৪ জুলাই বিকেল ৩টায় অক্টো অফিস সংলগ্ন বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও ২১ আগস্ট শোক সভা ও র্যালী উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক প্রস্তুতি সভায় দলের মাঝে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের মধ্যে অনেক গ্রুপিং ছিল তাই বলে আওয়ামীলীগের রাজনীতি শেষ হয়ে যায়নি। আমি শামীম ওসমান ছাড়া কেউ নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের গ্রুপিং মিটাতে পারেনি। তাই আমি মনে করি দলের মধ্যে গ্রুপিং আছে থাকবেই। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আসতে হবে আওয়ামীলীগের জন্য নয়, এ দেশ ও দেশের মানুষকে বাচাঁতে হলে তাঁকে ক্ষমতায় আসতে হবে। নয়তো আবারো দেশে জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটবে, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাট হবে এবং দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই এখন থেকে আমাদেরকে সক্রিয় হতে হবে। এবার যদি আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না আসে তাহলে দেশ চিরতরে ধ্বংসের দিকে চলে যাবে।
সভায় ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও আওয়ামীলীগ জাতীয় পরিষদের সদস্য চন্দন শীল, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন, সদর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রশীদ, সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামছুল ইসলাম ভূইয়া, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বীরু, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি নাজিমউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস।
এমপি শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমার নেত্রী শেখ হাসিনা সমর্থীত প্রার্থী আইভীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের মধ্যে কিছু লোক এটা পছন্দ করেনি। কারণ তারা মনে করেন নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের গ্রুপিং শেষ হয়ে যাচ্ছে। তারা সব সময় চায় আওয়ামীলীগের মধ্যে সব সময় গ্রুপিং থাকুক। কিন্তু আমি ঐ সব লোকদের কিছু তোয়াক্কা না করে আইভীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। এখন আমাদের মনে করতে হবে সিটি করপোরেশন ব্যর্থ আমাদের ব্যর্থ আর সিটি করপোরেশন সফল আমাদের সফল বলে মনে করতে হবে। আগামী ১৫ আগস্ট শহরে র্যালী বের হবে। ওই র্যালীতে আইভী উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রন করা হবে আমি আশা করি সে থাকবে। যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন তারা অবশ্যই শোক র্যালীতে অংশ গ্রহন করবে।
শামীম ওসমান আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পত্রিকায় আমার ও আমার দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নানা ধরনের উল্টা পাল্টা লেখালেখি করে থাকে। অনেক সময় আমার নেতাকর্মীদের মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী বলে নিউজ করা হয়। ওইসব সাংবাদিককে বলতে চাই আপনারা আমার বিরুদ্ধে লেখেন সমস্যা নাই। আমার বিরুদ্ধে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে অনেক কিছুই উল্টা পাল্টা লিখেছেন। আমি সংসদ বসে তা প্রতিবাদ করেছি। তার পরও বলছি আপনারা আমার বিরুদ্ধে যত খুশি লিখেন সমস্যা নাই। কিন্তু আমার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লিখলে ছাড় দেয়া হবে না।
আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, মহানগর কৃষকলীগের সভাপতি আরমান হোসেন জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান লিটন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের মো. জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক দুলাল, মহিলা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ইসরাত জাহান স্মৃতি, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক সাদিয়া আফরিন বাবলী, মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুইটি ইয়াসমিন ছাড়াও নাসিকের দলীয় কাউন্সিলরসহ অঙগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।