নারায়ণগঞ্জ র্বাতা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন ) : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ বর্তমানে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। সে লক্ষ্যে তৃনমূলের অভ্যন্তরিন কোন্দল মেটাতে ইতিমধ্যে দলের হাইকমান্ড থেকে জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্ধকে নির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সবদলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে কাজ করছে শেখ হাসিনার সরকার। দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন না করে যে ভুল করেছে তা তাদের বোধগম্য হওয়ায় এবার নির্বাচনে অংশগ্রহনের ঘোষনা দেয়ায় পাল্টে যাচ্ছে হিসেবে নিকেশ। তাই আগে থেকেই মাঠে নেমে পরেছে আওয়ামীলীগ।
কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানালেও নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসন থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশায় বিভক্ত হয়ে পরেছে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অংঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একদিকে সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও অঙ্গ সংগঠনের একটি অংশ নিয়ে চষে বেরাচ্ছে পাড়া মহল্লা। অপরদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম অঙ্গ সংগঠনের অপর একটি অংশকে সাথে নিয়ে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছেন। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দলের এ বিভক্তিতে হতাশা বিরাজ করছে তৃনমূলে।
রাজনৈতিক বোদ্ধা মহলের মতে, তাদের এ বিভক্তিতে লাভভান হবে জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। সম্প্রতি দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্যে ফুটে উঠেছে সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের এহেন অবস্থা। তাদের এ আচরনকে দলের আনুগত্যের বহির্ভুত মনে করছে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল। আর এই দ্বন্দ্বকে আর্শিবাদ হিসেবে কাজে লাগিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারে জাতীয় পার্টি, এমনটাই তারা ধারনা করছে।
এদিকে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এখন বৃষ্টি ভেজা রাতেও জনসাধারনের খোঁজ নিতে তাদের দ্বারে দ্বারে চলে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের (সোনারগাঁও) সংসদ সদস্য আলহাজ্ব লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি সর্বদাই দলমতের উর্ধ্বে থেকে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে সোনারগাঁওয়ের উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । সোনারগাঁওবাসীর জন্য স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসায় অনুদান সহ বেহাল সড়কের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। যার জন্য উন্নয়নের বাস্তব রুপরেখায় সোনারগাঁওবাসীর কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।
তবে বিগত নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় এমপি নির্বাচিত হলেও আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই দলীয় প্রার্থী দিতে এবং অন্য কোন দল তথা জাতীয়পার্টিকে কোন সংসদীয় আসন ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামীলীগ। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন (সোনারগাঁও) থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশায় যেমনি আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছে সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার। ঠিক তেমনি ঝড় বেগে এগিয়ে যাচ্ছে উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম। এছাড়াও মনোনয়নের প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেছেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূইয়া সহ নাম শোনা যাচ্ছে আরও অনেকেরই।
সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত এ ব্যপারে তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বৃহত্তর দলের সভানেত্রী উনি যদি আমাকে মনোনয়ন দিতে পারে, তাহলে যারা আমাকে নিয়ে সমালোচনা করে আমার মনে হয় উনাদের থেকে আমার নেত্রী, মাননীয় প্রথানমন্ত্রীর জ্ঞানটা একটু বেশী আছে। তাদের বিষয় নিয়ে আর কি বলার থাকে। আমি দলের কিছু বলেই আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। কেউ তো আর উড়ে এসে জুড়ে এ স্থানে বসতে পারে না। এতো বড় একটা দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের র্প্রাথী হিসেবে নৌকার সব ভোটাররা কি আমাকে এমনি ভোট দিয়ে দিল। প্রায় ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে এমনিই প্রতিদন্দ্বিকে হারিয়ে বিজয় হয়েছিলাম। এটাকি হাতের মোয়া। এখনতো অল্টু বল্টুরাও এমপি হয়ে যায়। এমন সপ্ন দেখে, আমি এমপি হতে চাই। আমাকে যারা বলে আমি নাকি দলের কেউ না। আমার কোন চিহ্ন বা অস্তিত্বই যদি না থাকে তাহলে এই যে ছাত্রলীগ কমিটি আমাকে দিল। যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ কিভাবে আসলো।
অনেকেই এমপি প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে চায়, চাইতেই পারে। তবে নেত্রী যাকে মনোনয়ন দিবে তার হয়েই কাজ করতে হবে। এটা হলো শতভাগ সত্যকথা। তবে কিছু অদৃশ্য শক্তি আছে যারা আমাদের দলটাকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। রাজনীতি সবাই বুঝে তবে আমাদের দলের কিছু নেতা রয়েছে যারা র্বতমান এমপির সাথে আতাত করে চলছে। বিবেদ সৃষ্টি করেছে। আর যারা ব্যাক্তি র্স্বাথ নিয়ে একটু বেশী চিন্তা করে এখন তারাই আবার মনোনয়নও চাচ্ছে। তবে নেত্রীর নির্দেশনায় আমরা কেউ অমান্য করবনা। জাপার অনেকেই আমার সাথেও রয়েছে। জাপার দিক থেকে তিনি তার কৌশলে আগাচ্ছে। কিন্তু মাঠের রাজনীতিতে ক্ষতি হলেও নির্বাচনের মাঠে হতে দেয়া হবে না। কারন আওয়ামীলীগের কর্মীরা পরিক্ষিত কর্মী। আর সকলেই আমরা নৌকা নিয়েই মাঠে কাজ করব।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের (সোনারগাঁও) সংসদ সদস্য আলহাজ্ব লিয়াকত হোসেন খোকা জানায়, প্রতিটি বড় দলেই দ্বন্দ্ব থাকবে এটা বড় ব্যাপার না। আছে এবং এটা থাকবেই। তবে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার যে দায়িত্ব ছিল সোনারগাঁওবাসীর জন্য আমি শুধু তা পালন করে যাচ্ছি। জনগনের সেবা করার আলোকে যেভাবে যা কাজ করার আমি তা করছি এবং আগামীতেও এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখব ইনশাল্লাহ। আর আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জনগনের ভোটে আমি বিজয়ী হয়ে তা প্রমান করবো। কারণ সোনারগাঁবাসীর ভালোবাসার কাছে আমি ঋণি। আমি নির্বাচিত হলে সোনারগাঁবাসীর হয়ে তাদের সেবা করে বাকি অসর্ম্পূণ কাজের পরির্পূণ করব।