নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সকল আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে মহাসপ্তমী পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে শহরের মন্ডপ-মন্দিরে দেবী দুর্গার বন্দনা হয়েছে নবপত্রিকায়, মহামায়ার প্রকৃতি রূপের আরাধনায় মহাসমারোহ। পুষ্পাঞ্জলির মধ্য দিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
নবপত্রিকা হল নয়টি উদ্ভিদের পাতা। এই নয়টি উদ্ভিদকে দেবী দুর্গার নয়টি বিশেষ রূপের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একটি কলা গাছের সঙ্গে কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মানকচু ও ধান গাছ শ্বেত অপরাজিতার লতা দিয়ে বাঁধা হয়। তারপর লালপাড়ের সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে দেওয়া হয় বধূ রূপ।
তারপর তাতে সিঁদুর দিয়ে সপরিবার দেবীপ্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম কলাবউ।
নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। দুর্গা প্রতিমার সামনে একটি দর্পণ বা আয়না রেখে সেখানে প্রতিফলিত প্রতিমার প্রতিবিম্বে নানা উপাচারে দেবীকে স্নান করানো হয়।
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, এসব ক্রিয়ানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাজের কৃষিসম্পদ, খনিজসম্পদ, বনজসম্পদ, জলজসম্পদ, প্রাণিজসম্পদ ও ভূমিসম্পদ রক্ষা ওপর আলোকপাত করা হয়।
এ বছর নারায়ণগঞ্জ জেলায় ২১৪ টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যা গতবছরের তুলনায় ১০টি কম। এর মধ্যে ৪৩টি পূজা মন্ডপ নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় রয়েছে।
শ্রীশ্রী বলদেব জিউর আখড়া ও শিবমন্দিরের পুরহিত অজয় চক্রবর্তী বলেন, সকাল ৬টা নবপত্রিকায় প্রবেশ ও স্থাপনের মাধ্যমে সপ্তমী পূজা শুরু হয়। কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার পর কলাবউয়ের মহাস্নান ও পুষ্পাঞ্জলির মধ্য দিয়ে সপ্তমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
পুরোহিত বলেন, দেবী দুর্গার চরণে ভক্তরা অঞ্জলি দিয়েছেন। দেবীর পদজলে উপবাস ভেঙে প্রার্থনা করেছেন। সপ্তমী পূজার মাধ্যমে সপ্ত ব্রহ্মাণ্ডের পাপসমূহ দূর হয়।
শ্রীশ্রী বলদেব জিউর আখড়া ও শিব মন্দিরের সভাপতি জয় কে রায় চৌধুরী বলেন, মহাসপ্তমীতে নবপত্রিকা’র আরেক নাম কলাবউ পূজা ও অঞ্জলি অনুষ্ঠিত হয়। এবছর আমাদের মন্দিরে প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়েই সাজসজ্জা করা হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে সকালে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় । শান্ত ও সুন্দর পরিবেশে সবাই পূজা উদযাপন করেন।