মামুনুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ২ জনের সাক্ষ্য

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের আদালতে এসে পঞ্চম দফায় সাক্ষ্য গ্রহণে অংশ নিলেন হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক। ১৭ জুলাই রবিবার দুপুরে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত মামুনুলকে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে তোলা হয় ৷পরে আদালতে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি সোহাগ রনি ও সোনারগাঁয়ের বাসিন্দা রতন মিয়া। এসময় মোহাম্মদ পারভেজ নামে অপরজন আসলেও তার সাক্ষ্য গ্রহণ করেননি আদালত।

এদিকে আদৌ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাক্ষিদের কোন মিল পাচ্ছে না বলে দাবী করেছেন অভিযুক্ত মামুনুলের আইনজীবী একেএম ওমর ফারুক নয়ন। তিনি বলেছেন, মামুনুল হকের বিপরীতে ৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করার কথা রয়েছে। সে লক্ষ্যে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছে। তবে আজ ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ রনি আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা রতন। পারভেজ নামে অপর একজন সাক্ষ্য দিতে চাইলেও আদালত তা গ্রহণ করেনি। পরে হয়তো নিবেন। তবে সাক্ষিদের কোন মিল নেই। তারা বলেছে যে তারা সামনের গেইট দিয়ে এসে পিছনের গেইট দিয়ে বের হয়েছে। তারা যদি পরিষ্কারই হতো তাহলে নিশ্চই পিছনের গেইট দিয়ে বের হতো না। তাছাড়া মামুনুল হক শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই পরে তাকে বসতে দেয়া হয়েছে। আমরা দীর্ঘ সময় সাক্ষিদের জেরা করেছি। আশা করছি আমাদের বিবাদী বেখসুর খালাস পাবে।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিব উদ্দিন বলছেন, মামুনুল ধর্ষণ মামলার আসামী। স্বাক্ষীরা আদালতকে জানিয়েছেন ঘটনার দিন তারা যা দেখেছিল। সাক্ষিরা আদালতে বলেছেন, মামুনুল হক পুলিশের কাছে মামলার বাদীকে স্ত্রী পরিচয় দেয় তবে জান্নাত আরা ঝর্ণা জানায় সে তার স্ত্রী নয়। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। আদালত সাক্ষিদের এই সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। আজকে ২ জন সাক্ষি দিয়েছে। মামলার মোট ৪৩ জন সাক্ষির মধ্যে এ নিয়ে ১১ জন তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ধর্ষণ মামলায় পঞ্চম দফায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য কঠোর নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুলকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুপুরে তাকে পুণরায় কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে নারীসহ স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। সে সময় তিনি বিব্রতকর অবস্থায় পড়লে হেফাজতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান। তখন আওয়ামী লীগের কার্যালয়, স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বেপরোয়া ভাঙচুর চালান হেফাজতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। হামলা ও ভাংচুর করা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২ শতাধিক যানবাহন। রয়েল রিসোর্ট কান্ডে ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন। ১০ সেপ্টেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জান্নাত আরাকে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জান্নাত আরার দায়ের করা ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

add-content

আরও খবর

পঠিত