নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার রোধকল্পে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯শে জুন বুধবার বেলা ১১টায় বন্দর উপজেলা পরিষদের অডিটরিয়ামে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, আগে বলতাম অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান। মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে। ছোট বেলায় আমরা আন্দলনের সময় দেখেছি। কিন্তু এখন আর ওই চাহিদার কেউ বলে না। আমরা গরিব মানুষের জন্য প্রায় অনেক ঘর-বাড়ি তৈরি করে ফেলেছি। জমিও দিয়ে ফেলেছি। এখন আর ওই দাবি নেই। এখন ভিন্ন ভিন্ন দাবি। এখন চাই শান্তিতে বসবাস করতে। এখন চাই সন্ত্রাস মুক্ত, জঙ্গীবাদ মুক্ত মাদক মুক্ত সমাজ। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আপনার আমার সন্তান তারা নিরাপদ নাই। আপনি যার জন্য এত বাড়ি গাড়ী করছে সে এখন নিরাপদ নাই। প্রমাণ আমার জেলখানা নারায়ণগঞ্জে। আপনি যাবেন ওইখানে ১৪শ থেকে ১৫শ আসামী আছে। আপনারা এখানে যারা আছেন আপনাদের আত্মীয় স্বজনদের ২/১ জন সন্তান ওইখানে রয়েছে নিশ্চিত। প্রায় ৮শ ৯শ বাচ্চা ওইখান থাকে। তাদেরকে দেখতে সুন্দর চেহেরা সুন্দর ইউনির্ভাসিটিতে পড়ে বা কলেজে পড়ে। আপনারা মনে করতে পারেন ওই ছেলেটি হয়তা আমেরিকা লেখাপড়া করছে। কিন্ত সে আছে আমার জেলখানায়।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, মাদকদ্রব্য কারণে, ইয়াবার কারণে আইসের কারণে। কি আধুনিক আধুনিক নাম। মেবাইলের ব্রান্ড বা মডেল পরিবর্তনের মত। তেমনি মাদকেরও স্টেইল পরিবর্তন হচ্ছে। সমাজ এত ক্ষতিগ্রস্থ ও হুমকির মুখে আপনার সন্তানকে আপনার ভাইকে আপনার নাতিকে যে ইউনির্ভাসিটিতে পৌছাচ্ছেন বা পাঠাচ্ছেন সে যে আজ একজন মাদকসেবী পাশে বসে ক্লাশ করছে না এর কোন গেরান্টি নাই। করোনা মাস্ক পড়লে ঠেকানো যায়। ৩ বার টিকা নিলেও ঠেকানো যায়। বুষ্টার টিকা নিলেও ঠেকানো যায়। মাদক ঠেকাতে পারেবন না। যেদিন সে মাদক গ্রহণ করল সেদিন সে আর মানুষের দলে থাকল না। কারণ মাদক আসক্ত। যিনি আসক্ত হয়ে যান তার ভিতরে আর মানবতা বোধ থাকে না। আপনারা জানেন মাদকের কারনে নেশাগ্রস্থ মেয়ে বাবাকে মেরে ফেলেছে। এদেশে যত হত্যাকান্ড হয় সব এই মাদকের কারণে। এক সময় জমি জমা নিয়ে মারামারি হতো। আগে বলতাম সকল গন্ডগলের মূল কারণ হল জমি জমা। এখন বলি সকল গন্ডগলের মূল কারণ হল মাদক। এখন আমরা বলি গডফাদার। বারেই সুন্দর নাম। তারা সব কিছুর আড়ালে থাকে। তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা বি.এম. কুদরত এ খুদা সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ এম.এ রশীদ, উপজেলা পরিষদের সহকারি (ভুমি) কর্মকর্তা সুরাইয়া সুলতানা, বন্দর থানা অফিসার ইনর্চাজ দীপক চন্দ্র সাহা, সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালিমা হোসেন শান্তা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উপ সহকারি পরিচালক মো. মামুন সহ প্রমুখ।