আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলায় নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত ৪১৪ জন শিক্ষককের এমপিওর ফাইল প্রসেস করার নামে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১১ দিন আগে দুর্নীতি দমন কমিশন তার অফিসে অভিযান চালানোর পর শিক্ষা কর্মকর্তা অফিসে আসা বন্ধ রেখেছেন। এর মধ্যে অনেকেই প্রতিদিন শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে শিক্ষকরা ফাইল প্রক্রিয়া করার জন্য ঘুরাঘুরি করছে কিন্তু তাকে অফিসে না পেয়ে ফাইলে স্বাক্ষর করাতে পারছে না।

সরকারের শিক্ষা বিভাগের অধীনে এনটিআরসিএর মাধ্যমে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্কুলে ৪১৪ জন শিক্ষক সরাসরি সরকারী বিধি মোতাবেক এমপিও শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে জেলার ১৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। এরপর যোগদানকৃত শিক্ষকরা সরকারী নিয়ম অনুযায়ী বেতন ভাতা প্রাপ্তির জন্য জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করতে হয়। এই আবেদনটি প্রক্রিয়া করার জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত প্রত্যেক শিক্ষক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রথম পর্যায়ে ১৫ হাজার এবং পরবতীতে আরো ৫ হাজার টাকা প্রদান করতে হয়েছে।

আড়াইহাজার উপজেলার একটি স্কুলে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক সালেহা আকতার জানান, তিনি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পিয়ন আবুলের মাধ্যমে দুই পর্যায়ে ২০ হাজার টাকা প্রদান করার পর তার ফাইল প্রসেস করা হয়েছে। তিনি আর জানান, অনেকেই প্রতিদিন টাকা নিয়ে পিয়ন আবুলের কাছে বসে থাকতে হচ্ছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, পিয়ন আবুল ৬ বছর আগে অবসর গ্রহণ করার পর এখনো শিক্ষা অফিসে বহাল আছে। সে এসকল শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে শরিফুল ইসলামকে প্রদান করে থাকে।

এদিকে, শহরের গণবিদ্যা নিকেতন হাই স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, গত ১ বছর যাবত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় শরীফুল ইসলাম সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। তিনি স্কুলে না আসলেও বেতনের চেক সই করতে প্রতিজনকে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। ওই শিক্ষক জানান, করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি না হওয়ায় এ রকম ১৭টি স্কুলে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিটি স্কুলে শিক্ষকদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ আদায় করছে। তাছাড়া এদিকে একাধিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছে, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম নিজেই নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিও ফাইল প্রসেস করে শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জেলা মিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের সাথে টেলিফোনে কথা বললে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযানের কথা স্বীকার করে বলেন, দুদক কি কারণে তার অফিসে অভিযান চালিয়েছে তিনি জানেন না। তবে তিনি নতুন শিক্ষকদের এমপিও করার বিষয়ে টাকা আদায়ের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন কোন না কোন উপজেলায় তাকে তদন্তে যেতে হয় সে কারণে সাধারনত রাতে তিনি অফিস করেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত