নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাহফুজ (১৯) নামে এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করেছে প্রতিপক্ষরা। ১১শে মার্চ শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সৈয়দপুর কয়লাঘাট ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোটরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা এসে সেখান থেকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে কর্তবরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, ১২ই মার্চ শনিবার সকাল থেকে যুবকের লাশটি অ্যাম্বুলেন্স করে নিয়ে এসে সদর থানা প্রাঙ্গণে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে স্বজনদের। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেহেদী, সায়েম ও তমাল নামে তিনজনকে থানায় নিয়েছে পুলিশ। তারা তিনজনই খানপুর ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা।
জানা গেছে, নিহত মাহফুজের পিতা হারুন অর রশিদ মল্লিক। সে খানপুর বউ বাজার এলাকার মাকসুদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া। নিহত মাহফুজ ৩ বোনের একমাত্র ভাই ছিল। তার শোকে থানার ভেতরে তাদের আহাজারী করতে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নিহত যুবকের বড় বোন পলি জানায়, সে বার একাডেমী স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। একটি কলেজে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে পড়াশোনা চালাতে পারিনি। এখন গার্মেন্টে কাজ করে ২ থেকে ৩ মাস হবে। শুক্রবার বিকাল ৫টায় বন্ধুরা ফোন করে ডেকে নেয়। এখন শুনছি বছরখানেক আগে থেকেই পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই এলাকায় গেলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামরি হয়েছিল। তখন এ ঘটনা ঘটে।
মা মাবিয়া বেগম সুষ্ঠু বিচারের দাবি রেখে বলেন, মেসে রান্না কইরা খাওয়াইয়া ছেলেরে বড় করছি। তিন মেয়ের পর একমাত্র ছেলে ছিল মাহফুজ। মাহফুজের পিঠে কুপের আঘাত দেখেছি। আমি আমার সন্তান খুনের বিচার চাই।
ঘটনার বিবরণে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক জানান, শুক্রবার রাতে পূর্বের কোন দ্বন্দ্বের জেরে মাহফুজের বন্ধুরা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর প্রতিশোধ নিতে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে প্রতিপক্ষের লোকজন একটি নৌবিহার শেষ করে আসে। পরে তাদের উপর চড়াও হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে নেয় অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হয় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এঘটনায় ৩ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) মো. শাহজাহান জানায়, আমরা তাদের পরিবার ও বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবো।