হকার ইস্যুতে আবারো উত্তপ্ত হচ্ছে শহর

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : ফুটপাতকে কেন্দ্র করে ফের সংগঠিত হচ্ছে হকাররা। আসন্ন রমজান মাস ও ঈদ উপলক্ষে ফুটপাত দখলে নিতে হকার নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্যে আবারো উত্তপ্ত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ শহর। এরআগেও হকারদের আন্দোলনের ডাকে এ ইস্যুতে সঘর্ষের ঘটনায় মেয়র আইভী, নাসিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিক সহ অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনা ঘটেছে। ২৩এপ্রিল  রবিবার সকালে শহরের চাষাড়া শহীদ মিনারে জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে ফুটপাত বসার দাবীতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওই সমাবেশে হকার নেতারা বলেছেন, কি সেলিম ওসমান, কি শামীম ওসমান আর কি মেয়র আইভী, কেউ আমাদের সাথে সুবিচার করেন নি। এতদিন তাদের পিছনে ঘুরেও আমাদের কোন লাভ হয়নি। তাই আবারো আমরা বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমে এসেছি।

বক্তারা বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধু সড়কে প্রায় ২ হাজার ৫ শ এর মত হকার আছে। সামনে ঈদ উল ফিতর ও মাহে রমজানের সময়টা বেচাকেনার সময়। এ সময় যদি হকাররা বেচাকেনা করতে না পারে তাহলে, তাদের রাস্তায় ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোন কিছুই করার থাকবে না। তাই আমরা প্রশাসন ও মেয়রকে আগামী ৩০ এপ্রিল অর্থ্যাৎ ৭ দিনের সময় দিয়েছি, যদি এর মধ্যে হকারদের বসানো ব্যবস্থা না করে তাহলে পহেলা মে থেকে আমাদের বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে। আর সে আন্দোলনে পুলিশ যদি গুলি করে, তাহলে আমরা গুলি খেতেও প্রস্তুত আছি। আমাদের আর কিছু করার নেই।

এদিকে বেশ কিছুদিন নিশ্চুপ থাকলেও হঠাৎ ফুটপাত দখলে হকারদের এমন হুংকারে পরিকল্পিতভাবে উস্কে দেয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। সমাবেশে হকারদের উস্কে দিয়ে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম। তিনি এই সমাবেশে তাঁর বক্তব্যে দাবি করেছেন, হকারদের পূনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত, তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

হকার্স সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে হাফিজুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, আন্দোলন এখনো শুরু হয় নাই। সামনে আরও আন্দোলন হবে। অনেক দেখেছি, অনেক সহ্য করেছি, অনেক দরখাস্ত, স্মারকলিপি দিয়েছি। আর না। এসব দেয়ার সময় আর নেই। রোজার মাসে যদি হকার উচ্ছেদ করা হয় তাহলে বৃহত্তম আন্দোলন গড়ে তুলে এর জবাব দেয়া হবে।

তিনি হকারদের অভয় দিয়ে বলেন, আপনারা ভয় পাবেন না। আপনাদের পাশে হাজার হাজার শ্রমিক আছে। সময় মতো লাল পতাকা নিয়ে সবাই এসে আপনাদের পাশে দাঁড়াবে। দরকার হলে লাঠি মিছিল হবে। মশাল মিছিল হবে। গরীবদের প্রতি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করবো।

হাফিজ মেয়রকে ইংগিত করে আরও বলেন, দাবি করা হয় হকারদের কারণে যানজট হয়। কিন্তু এখন এই যানজট কেন হচ্ছে? এখন তো হকার নেই। তাহলে যানজট কেন? ঢাকা সিলেট রোডে, চিটাগাং রোডে তো হকার বসে না। তবে সেখানে কেন যানজট হয়? সুতরাং এসব খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে পুর্নবাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ মেনে নেয়া হবে না। হবে না।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারী মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার ইস্যুতে সংর্ঘষ হয়। এসময়ে মিছিল থেকে ফাঁকা গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। সংঘর্ষের পরদিন ১৭ জানুয়ারী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসিম উদ্দিন হায়দারকে। কমিটির অন্য দুইজন হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, র‌্যাবের সহকারি পরিচালক বাবুল আক্তার। এদিকে সৃষ্ট সংঘর্ষে ঘটনা তদন্তে আরো ৭ কার্যদিবস সময় পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ২৪ জানুয়ারি বুধবার ৭দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আরো ৭দিনের সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়। কমিটিকে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিলো। তবে পর্যায়ক্রমে তদন্ত প্রতিবেদনের কার্যক্রম এখনো সম্পন্ন হয়নি বলে সূতে জানা গেছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত