মসজিদে আমলে বসতে বাধা দিচ্ছে ও হামলা করছে : তাবলীগের সদস্য

নারায়ণগঞ্জ বারর্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : ধর্মীয় মনোভাবে উস্কানী ঘটে এমন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে দাওয়াতে তাবলীগের কার্যক্রম এবং টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন ভাবে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে সরকারের কাছে স্মারকলীপি প্রদান করেছেন নারায়ণগঞ্জের মূলধারার তাবলীগ জামায়াত এর নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় তারা জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়ার কাছে এ স্মারকলীপি তুলে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মুফতি নুরুল হক, মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আসাদুল্লাহ, মুফতি আবু সাইদ, তাবলীগ জামায়াতের সাথী মো.আসাদুজ্জামান, মো.তোফাজ্জল, মো. মনির শেখ, মোহাম্মদ আলী, জালাল উদ্দিন রাসেল, আশরাফ হোসেন রুবেল, মাসুদ, শাহাদাৎ প্রমুখ।Add Media Photo-01

স্মারকলীপি প্রদান শেষে তারা জানায়, মাওলানা সাদ সাহেবকে বিতর্কিত সহ টঙ্গিতে বিশ্ব ইজতিমা ও দাওয়াতে তাবলীগের মোবারক মেহেনতকে বন্ধ করতে পাকিস্তান থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ওলামায়ে হিন্দ মাওলানা মাহমুদ মাদানী (দা: ব:) বলেছেন, মাওলানা সাদ সাহেব (দা: ব:) আহালে সুন্নাত উয়াল জামাতের মধ্যে আছেন এবং নিযামউদ্দিনই পৃথিবীর আলমী মার্কাজ। আর তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংঘ । এই সংঘের বিশ্ব মারকাজ বা সদর দফতর ভারতের রাজধানী দিল্লির নিযামুদ্দিনের বাংলাওয়ালি মসজিদ এবং নিযামুদ্দিন মারকাজের বাংলাদেশের শাখা বা বাংলাদেশের মারকাজ রাজধানী ঢাকার কাকরাইল মসজিদ। বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের মূলধারা অর্থাৎ বিশ্ব মারকাজ নিযামুদ্দিন থেকে বিচ্যুত হয়ে একটি বিভ্রান্ত এবং বিদ্রোহী গ্রুপ বাংলাদেশ তবলিগ জামাতকে ভাঙ্গনের উদ্দেশ্যে এবং নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দুইটি ভুল তথ্য দিয়ে তবলিগ জামাতের সাথে সম্পর্কহীন কিছু রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের প্রত্যক্ষ মদদ এবং সহযোগিতায় সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং পবিত্র এই মহতী কার্যক্রমকে বিতর্কিত প্রকারন্তরে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা করছে।

মূলধারার তাবলীগের সদস্য দাবী করে তারা আরো বলেন, আমরা কখনো শক্তি প্রয়োগ করিনি। কোনো মিডয়ার কাছে যাই নাই। আমরা সমস্ত মুসলিমদের নিয়ে আল্লাহর আমল করতে চাই। আমাদের লোক জন সেজদা করে কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে বলেন, আমাদের মিলিয়ে দেন। কিন্তু তারা যে সমস্ত কর্মকান্ড করছে তা সবাই অবগত। তারপরও তারা আমাদের প্রত্যেকটা প্রোগ্রামে বাধা সৃষ্টি করতেছে। মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মুসল্লিদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দিচ্ছে। এভাবে প্রমাণ ছাড়া বলতে পারে না। যদি কোনো প্রমাণ থেকে থাকে তাহলে সেগুলো প্রকাশ করুক। আমরা দেখতে চাই। আগে কখনো এ নিয়ে কোনো সমস্যা ছিলো না। আমরা কালিরবাজার মারকাজ মসজিদে দ্বিনের জন্য আমলে বসি, সেখানে তারা আমাদেরকে বাধা দিচ্ছে, হামলা করছে। প্রতিটি মসজিদে তাবলীগ জামায়াতকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এরা একটি রাজনীতির পক্ষ নিয়ে এমন কর্মকান্ড সংঘটিত করছে। যদিও পুলিশ প্রশাসন শক্ত অবস্থান নিয়ে সেদিন তাদের বাধা দিয়েছে। সরিয়ে দিয়েছে।Add Media Photo--02

এর আগে সকাল সোয়া ১২টায় তাদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে শহরের চাষাঢ়া থেকে জেলা প্রশাসকের র্কাযালয়ের দিকে আসতে দেখা যায়। তাদের সাথে এসময় প্রায় ২ হাজার মানুষের জমায়েত ছিলো। যারা প্রত্যেকেই সারিবদ্ধভাবে লাইন করে পথের ডানপাশ দিয়ে হাটঁতে দেখা যায়। যেকারণে সড়কে যানবাহন চলাচলে কোন বাধাঁর সৃষ্টি হয়নি। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের র্কাযালয়ে মূল ফটকে আসলে পুলিশের বাধার সম্মূখিন হয়। পরে তাদের সাথে কথা বলেও সেখানেই শৃঙ্খলা বজায় রেখে দাড়িয়ে থাকে, পরে কয়েকজন প্রতিনিধি জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাতে প্রবেশ করে। আর বাকিরা মসজিদে নামাজে আর ঝিকিরে চলে যায়। এতে করে সর্বসাধারণের কাছে এটি একটি শিক্ষনিয় হিসেবে ব্যপক সুনাম অর্জন করে।

উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১২ নং অনুচ্ছেদে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং সকল ধর্মাবলম্বী বাধাহীনভাবে ধর্মচর্চা ও অনুসরণ করবেন- এটি সংবিধানের বিধান এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্যও বটে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৪১ এর ১ (ক) তে সুস্পষ্টভাবে আরও উল্লেখ আছে ” প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে;। যে দুইটি ভুল তথ্য দিয়ে মূলধারা বিচ্যুত এই বিদ্রোহী গ্রুপ জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে সেগুলি হোল, ভারতীয় নাগরিক বিশ্ব তবলিগ জামাতের মূল কেন্দ্র দিল্লি নিযামুদ্দিন মারকাজের আমির হজরত মাওলানা সাআদ সাহেব নিজেকে নিজেই আমির ঘোষণা করেছেন এবং এই কারণেই তারা মাওলানা সাআদকে বিশ্ব আমির মানতে চান না অথচ এটি কোন তারিখে অথবা কোন পত্রের মাধ্যমে তিনি ঘোষণা করেছেন সেটির স্বপক্ষে কোন লিখিত প্রমাণ তারা দেখাতে পারে নাই । দ্বিতীয় ভুল তথ্য হোল, মাওলানা সাদ সাহেব কোরআন হাদিসের ভুল মৌখিক ব্যখ্যা করেন । এ ব্যাপারে বাংলাদেশের আলেমদের কারও পক্ষ থেকে এমনকি মাওলানা জোবায়ের সাহেব যিনি বহু বছর ধরে মাওলানা সাআদের বয়ানের অনুবাদ করে থাকেন তিনিও কোন বয়ানের ভুল ধরে সরাসরি মাওলানা সাআদ সাহেবকে চিঠি পত্রের মাধ্যমে কিংবা লিখিত রূপে কোণ বক্তব্য মন্তব্য অথবা মতামত দিয়ে কখনও অবহিত করেন নাই।

add-content

আরও খবর

পঠিত